নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের বাজারে এবার বাড়লো কাঁচা মরিচের দাম। ৫দিন আগেও জাত ভেদে কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। গত শনিবার থেকে এক লাফে প্রায় ৩ গুণ বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। হঠাৎ করে কেজিতে ৬০-৭০ টাকা বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন সীমিত আয়ের মানুষ। অধিকাংশ বিক্রেতা জানে না দাম বৃদ্ধির কারণ। তবে সরবরাহ কমের কারণে বেড়েছে দাম-এমন দাবি করেছেন কেউ কেউ।
১০০ গ্রাম মরিচ কিনতে দেখা যায় রিকশাা চালক ষাটোর্দ্ধ রহমত উল্লাহকে । একটু এগিয়ে কথা হয় তার সাথে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, একটার দাম কমলে বাড়ে আরও ১০টি পণ্যের ।
তার বাড়ি মণিরামপুরের পাচাখড়ি গ্রামে। প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে বাসে চেপে আসেন যশোরে। গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে দিনভর ভাড়া খাটেন। তিনি বলেন, গত ৩-৪ দিন আগেও কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আজ সেই মরিচের কেজি ১০০টাকা ছুঁয়েছে। আমাগোর বাঁচনের লাইন নাই! দিনভর ঘাম বিক্রি করে যে টাকা রোজগার হয় তা কাঁচা বাজারেই চলে যায়। কোন তরি-তরকির গায়ে হাত দেয়ার জো নেই ।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম কমেছে। ৩০-৩৫ টাকা দরের পেঁয়াজের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। ৬ কেজি আলু পাওয়া যাচ্ছে ১০০ টাকায়। এর বাইরে আর কোন সবজি ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে নেই। তিনি নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সয়াবিন তেলসহ নিত্যপণ্যের উর্দ্ধমুখী দাম নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন যশোর উপ-শহরের বি-ব্লকের বাসিন্দা মিনতি রানী রায়। তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, রাতারাতি কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৬০-৭০ টাকা কীভাবে বাড়তে পারে ? পত্রিকায় লিখে কী লাভ হয় ? দাম তো বাড়ছেই, কমানোর ক্ষমতা তো আপনাদের নেই। এ সময় তার চোখে-মুখে প্রতিবাদের ছাপ দেখা যায়।
তিনি বলেন, আজ খোলা সয়াবিন কিনলাম ১৭৩ টাকা কেজি দরে। এখন কাঁচা বাজারে এসে দেখি ঝাঁজ ছড়াচ্ছে কাঁচা মরিচ।
সবজির সাথে আলু, আদা, পেঁয়াজ-রসুন, শুকনো ও কাঁচা মরিচ বিক্রি করেন করিম। দৈনিক কল্যাণকে তিনি বলেন, বেনাপোল, ভোমরা ও হিলি বন্দর দিয়ে আসছিল ভারতীয় কাঁচা মরিচ। আজ এসে দেখি কাঁচা মরিচের সংকট। বাজারে মরিচের চালান আসেনি। সরবরাহ নেই-জানিয়ে তিনি বলেন, ক্রেতা ধরে রাখতে ৫ কেজি মরিচ কিনেছিলাম ৮০ টাকা কেজি দরে। ১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এখনো ৫০০ গ্রাম মরিচ বিক্রি হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত কেনা দরে বিক্রি করতে হতে পারে।
দিলদার ও সুজন নামে বিক্রেতা জানান, যশোরের বাজারে কারেন্ট ও ঝিয়া নামে দুই জাতের কাঁচা মরিচ আসে। ঝিয়া জাতের মরিচে ঝাঁজ বেশি। সেকারণে ভারত থেকে আমদানি করা কারেন্ট ঝালের চেয়ে দামও একটু বেশি। তবে এখন দেশেই কারেন্ট ঝালের চাষ হচ্ছে।
তারা বলেন, হঠাৎ কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধির কারণ এখনো আমরা জানতে পারিনি। তবে বাজারে ঝালের চালান না আসায় আগের কিছু ঝাল ছিল, যা এখন ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।