রানা আহম্মেদ অভি, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় সাতটি মসজিদের নির্মাণকাজ এখনো চলমান । প্রকল্পগুলোর সর্বনিম্ন ৭ শতাংশ, আর সবোর্চ্চ ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত নির্মাণকাজ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কর্মরত শ্রমিক ও ঠিকাদাররা বলছেন, প্রকল্প কাজের অর্থ ঠিকমতো বরাদ্দ না থাকায় তারা কাজ এগিয়ে নিতে পারছেন না। যারা প্রথম পর্যায়ে অর্ধেকের কিছু বেশি কাজ সম্পন্ন করেছেন, তারাই এখনো কোনো বিল পাননি। যে কারণে তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারেননি। আর সংশ্লিষ্ট দফতর বলছে, বরাদ্দের পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজে একটু বিলম্ব হয়েছে।
গণপূর্ত অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহে সাতটি মসজিদ ও ইসলামিক কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। ছয় উপজেলায় ছয়টি, আর জেলায় একটি। মসজিদগুলো তিন তলাবিশিষ্ট, যার মিনার ৯০ ফুট উঁচু হওয়ার কথা। বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৯২ কোটি ৩৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি কাজ শুরু হয়ে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
গণপূর্ত অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত হরিণাকু-ু মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ। কালীগঞ্জ মডেল মসজিদের কাজ শেষ হয়েছে ১২ শতাংশ। সদর উপজেলায় কাজ শেষ হয়েছে ২০ শতাংশ। এই তিনটি মসজিদ নির্মাণ করছেন ঠিকাদার টিপু মল্লিক।
জেলা পর্যায়ের মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ১৫ শতাংশ, কোটচাঁদপুরে ৬০ এবং শৈলকুপায় ২০ শতাংশ কাজ হয়েছে। আর মহেশপুরে মসজিদটির কাজ হয়েছে ৫৫ শতাংশ। এর আগে বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল ১০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে ঠিকাদারদের দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি ১৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। গত ১৮ জানুয়ারি প্রকল্পগুলোতে আরও ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
কাজের দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান বলেন, এই কাজের জন্য এখনো কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। যে কারণে ঠিকমতো কাজ করা যায়নি। যারা বেশি কাজ করেছেন, তারা বিল না পেয়ে এখন কষ্টে আছেন। তবে বরাদ্দ এলে দ্রুত কাজ শেষ করা যাবে। হরিণাকু-ু মসজিদ এলাকায় গিয়ে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজন জানান, ঠিকাদার জায়গা নির্বাচন করে দীর্ঘদিন ফেলে রেখেছিলেন। কিছুদিন আগে পাইলিং করেছেন। তারপর আবার কাজ বন্ধ।
এ বিষয়ে ঠিকাদার টিপু মল্লিক জানান, কাজগুলো দুই বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জমি পেতে তাদের এক বছর চলে গেছে। এরপর নকশা নিয়েও জটিলতা ছিল। সর্বশেষ অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। তিনি দাবি করেন, যে কাজ তিনি করেছেন তাতে কর্তৃপক্ষের কাছে ৯ কোটি টাকা বিল পাওনা। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে একটি টাকাও দেওয়া হয়নি। এসব কারণে মসজিদগুলোর কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না।
গণপূর্ত অধিদফরের উপসহকারী প্রকৌশলী ফারুক হোসেন জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে মূলত বিলম্ব হয়েছে। তবে সব কাজই এখন দ্রুত চলছে। জেলার কোটচাঁদপুর ও মহেশপুরের দুটি কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অন্য তিনটি দৃশ্যমান হয়েছে। কালীগঞ্জ ও হরিণাকু-ুর দুটি পাইলিংয়ের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।