শাহারুল ইসলাম ফারদিন
‘শুনেছি সিলিন্ডারের দাম কমেছে। তাই ভেবেছিলাম আজ হয়তো কিছুটা কমে কিনতে পারবো। কিন্তু বাজারে এসে দেখলাম, আগের দামে এখনও বিক্রি হচ্ছে।’ শহরের বড় বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে আসা খালধার রোডের সোহরাব হোসেন’র বক্তব্য এটি। শুধু তিনি নন, এমন অভিযোগ শহরের বারান্দি পাড়ার সাইফুল ইসলামেরও। তিনি বলেন, খাতা কলমে দাম কমেছে। দোকানদার তো সেই আগের দামই রাখছেন। সাইফুলের কথার সত্যতাও পাওয়া গেছে। শহরের বেশ কিছু দোকানে সরকার নির্ধারিত দাম সাটানো হয়েছে। তবে তার কার্যকারিতা নেই।
এপ্রিলে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডারের দাম কমে ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজির প্রতিটি সিলিন্ডারের দাম দুইশ ৪৪ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এতে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম দাঁড়ালো এক হাজার একশ ৭৮ টাকায়। যা মার্চে ছিল এক হাজার চারশ ২২ টাকা। রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকেই কার্যকরের কথা বলা হয়। এ দিন থেকে এক হাজার একশ ৭৮ টাকায় ভোক্তারা সিলিন্ডার কিনতে পারার কথা। কিন্তু যশোরের খুচরা বাজারে এর সুফল এখনও ভোগ করতে পারছে না ক্রেতারা। সোমবার শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত দামে মিলছে না এলপিজি গ্যাস। আগের মূল্যেই গ্যাস কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
আরও পড়ুন:আজো স্বীকৃতি পায়নি যশোরের ৫১ শহীদ
গত ২ এপ্রিল বিইআরসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দর জানানো হয়। সংস্থাটি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে, তবে তা সব জায়গায় কার্যকর হতে দেখা যায় না। সোমবার শহরের কয়েকজন এলপিজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এখনো ১২৫০-১৪০০ টাকা দরে গ্যাসের সিলিন্ডার দিচ্ছেন। তারা বলছেন আজ মঙ্গলবার একটা সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে। যেহেতু সোমবার পরিবেশক কোন গ্যাস সিলিন্ডার ডেলিভারি দেয়নি। একারণে দামও জানা যায়নি। তবে আজ মেমো পাওয়ার পর দাম জানা যাবে। ফলে ভোক্তারা গতকাল পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত নতুন দামে গ্যাস পাচ্ছেন না।
শহরের কাদের এন্টারপ্রাইজ, গ্যাস বিপণীসহ বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ভোক্তা পর্যায়ে বসুন্ধরা ও বেক্সিমকো এলপি গ্যাসের ১২ কেজির মূল্য এক হাজার চারশ টাকা, ওমেরা, যমুনা, ডেল্টা, সেনা, বিএম ও লাফস এক হাজার দুইশ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুধু ১২ কেজি গ্যাস ছাড়াও সাড়ে ৫ কেজি, ১৫ কেজি, ২০ কেজি, ৩০ কেজি, ৪৫ কেজির দামও আনুপাতিক হারে বেশি টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
এই প্রসঙ্গে গ্যাস বিপনীর ম্যনেজার সাহেব আলী বলেন, ডিলাররা পাইকারি বিক্রি করে, কিন্তু আমরা খুচরা বিক্রি করি। সেই জন্য দামের একটু পরিবর্তন হয়। আমাদের পরিবহন খরচ থেকে শুরু করে আরও অন্যান্য খরচ আছে। তাই আমরাই যখন সরকার নির্ধারিত এক হাজার একশ ৭৮ টাকায় কিনছি, তখন এ দামে ভোক্তাকে দেওয়া সম্ভব নয়।
এই বিষয়ে জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, আমরা বাজার মনিটরিং করছি। সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কেউ বেশি দামে গ্যাস বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:ছাত্রলীগের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বারবার নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম যবিপ্রবি