নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের মুড়লি রাজারহাট এলাকায় একযুগ হত্যা চাঁদাবাজি দখলবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকা নাসির ১৩ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। নানা অপরাধে জড়িত নাসির ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে অনেকটা গা ঢাকা দিয়ে স্থানীয় জণরোষ থেকে রক্ষা পান। আর তার বিরুদ্ধে চলমান হাফ ডজন মামলায় পুলিশ তাকে খোঁজ শুরু করে। এমন সময় তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন।
যশোর কোতোয়ালি জি আর ৯৬২ নাম্বার মামলায় তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন বলে তথ্য মিলেছে। এদিকে তার বিরুদ্ধে আসছে আরো অভিযোগ। হতে পারে আরো মামলা।
তথ্য মিলেছে, বহুলালোচিত রাসেল হত্যা মামলার আসামি রামনগর পুকুরকুল আমতলা মোড় এলাকার নাসির উদ্দীন (৪০)। তার ভাই পারভেজ (৩৬) ও একই পাড়ার সাইদুল ইসলাম (৪৮) তার সহযোগী হিসেবে নানা অপকর্ম করে বেড়াতেন। ২০১৩ সাল থেকে এলাকায় জবরদখল অপতৎপরতা শুরু করে এই নাসির ও তার লোকজন। ওই সময় তারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজ খানের ছেলে পান্না খানকে হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়ি ঘর ছাড়া করে তার জমি ও বাড়ি দখল করেন নেন। আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে খুন জখম করার ভয় দেখিয়ে পান্না খানকে সপরিবারে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে জমি ও বসতবাড়ি দখল করে নেন। এ ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন পান্না খান। জমি পান্না খানের এবং উচ্ছেদ করে তার মালিকানা বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশনা আদালত থেকে আসলেও পেশি শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জবরদখলে রাখেন নাসির গং। অস্ত্র প্রদর্শন করে ফের হুমকি দেয়ায় পান্না খান তাদের প্রতিহত করতে না পেরে যশোর শহরের চাঁচড়া এলাকায় ভাড়া থেকে জীবন জীবীকা শুরু করেন। ওই ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতে মামলা করাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দাখিল করেন পান্না খান। ফলে তার পরিবারের সদস্যদের উপর আবারো হুমকি আসতে থাকে। আর নাসিরের ভয়ে এলাকা ছাড়ের পান্নার পরিবার। এরপর ১১ বছর পর সরকার পতন হলে গত ১৩ আগস্ট পান্না এলাকায় ফেরেন। আর ১১ বছর জবর দখল ও রাসেল হত্যা মামলা তার বিরুদ্ধে চলমান। চার্জশিটভুক্ত আসামি এ্ই নাসির। এছাড়া মুড়লি রেল ক্রসিং এলাকায় ছিনতাই চাঁদাবাজি, এলাকায় দখলবজির আরো অভিযোগ রয়েছে। মাদক ব্যবসা পরিচলনা করাসহ একটি উঠতি সন্ত্রাসী চক্রকে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। যশোর ও জাতীয় পত্রপত্রিকায় তার বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও কিংবা তার নামে মামলা হলেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে এযাবৎ আটক এড়িয়ে চলেছেন।
যশোর সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মাজাহারুল ইসলাম রাজিব জানিয়েছেন, কমপক্ষে হাফডজন মামলা চলমান আছে ওই নাসিরের বিরুদ্ধে। এর আগে তার চক্রে রুম্মান নামে ছাত্রলীগের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। নাসিরকে ১৩ মে কোর্ট পুলিশ আটক করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তার চক্রের আরো অনেকে এলাকায় রয়েছে। তাদের আটকের দাবি জানিয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি মামলা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: অন্তরঙ্গ ছবি দিয়ে বাঁধনকে ব্লাকমেইল করছিল তিশা