নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে যশোরের ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজে উদ্যাপিত হয়েছে রজতজয়ন্তী উৎসব। উৎসব অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মাতেন তারা। শনিবার সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন আর বেলুন উড়িয়ে এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। পরে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে শোভাযাত্রা বের হয়।
দুপুরে আলোচনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, কলেজটি পথচলার ২৫ বছরে অনেক আলোকিত মানুষ গড়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যশোরকে আলোকিত করেছে। সুনামের সঙ্গে কলেজটি এগিয়ে যাচ্ছে। আগামিতেও আলোকিত মানুষ গড়ার নিরলস প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রাখবে। কলেজের গভর্নিং কমিটির সভাপতি ডা. মালিহা মান্নানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। বক্তব্য রাখেন রজতজয়ন্তী উৎসব উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক ও কলেজের অধ্যক্ষ জেএম ইকবাল হোসেন ও কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদ। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। সমগ্র অনুষ্ঠান ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা ফিরে যান কলেজজীবনের স্মৃতিচারণে। দীর্ঘদিন পরে নিজ ক্যাম্পাসে পুরাতন বন্ধুদের কাছে পেয়ে বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। সবাই একই রঙের পোশাক পরে ছবি, নাচে, গানে রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে মাতেন। কলেজের ২০০২ সালের শিক্ষার্থী জিল্লুর রহমান সিপন স্মৃতিচারণ করে দৈনিক কল্যাণকে বলেন, ‘আমাদের সময়ে কলেজের এতো উন্নয়ন ছিলো না। এখন অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মিলনমেলায় অনেক বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে। সবাই ফিরে গিয়েছিলাম সেই ২০২২ সালে। স্মৃতিচারণ করে বলেন, ২০০২ সালে বেনাপোলে বন্যা হয়। বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করা কঠিন হয়ে পড়লে ফিরোজ স্যার আমাকে তার বাসা থেকে পড়ার ব্যবস্থা করে দেন। মাহমুদুল হাসান নামে আরেক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, এ অন্যরকম দিন। সারাদিন আড্ডা দিচ্ছি। চাকরিজীবী হওয়ায় কেউ কাউকে সময় দেওয়া হয় না। তবে কলেজের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে একসাথে মিলিত হয়ে সবাই সবাইকে সময় দিচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা একসাথে নবীন-প্রবীণের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। তাব্বাচ্ছুম জাহান নামে এক দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, হাঁটি হাঁটি করে আজ কলেজের বয়স ২৫ বছর। অনেক বড়ভাই-আপুরা এসেছেন কলেজে। অনেক স্মৃতিচারণ করছে, শুনছি। তিনি বলেন, ‘সবার ধারণা সরকারি কলেজে পড়লে বড় চাকরি পাওয়া যায়, প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়। সেই ভ্রান্তধারণা থেকে সবাই বেরিয়ে আসা উচিত। অনেক বড়ভাইয়েরা এখান থেকে পড়াশুনা করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাদের দেখে আমরা অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। পরে সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি যশোর ঢাকার বিভিন্ন শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাতেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দুইদিনের রজতজয়ন্তী উৎসব শুরু হয়। এই উৎসবে সহ¯্রাধিক সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেন। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ডা. আবদুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক, স্মাতক, স্মাতক সম্মান শেষ করে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কলেজটির প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী।
২ Comments
Pingback: সরকার ভূত দেখার মত ভয় পেয়েছে : ফারুক
Pingback: চৌগাছায় প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত