কল্যাণ ডেস্ক: বাংলাদেশের ফ্যাশন পরিমণ্ডলের পরিচিত ও প্রিয়মুখ এমদাদ হক আজ শুক্রবার দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।
কয়েক বছর আগে কিডনি জটিলতার কারণে তার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। এরপর থেকে তিনি সুস্থই ছিলেন। তবে মাসখানেক আগে হঠাৎ শ্বাসকষ্টজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শ্যামলীর স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৫০ দিন তিনি এ অবস্থায় থেকে আজ দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে মারা যান।
আজ বাদ এশা বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন এমদাদ হকের ভাই ইস্তাম্বুল হক।
পুরান ঢাকার উর্দু রোডে জন্ম এমদাদ হকের। ফ্যাশন ডিজাইনার এবং ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশের সহসভাপতি হিসেবে তার শুরুটা হয়েছিল অধুনালপ্ত সাময়িকপত্র বিচিত্রায় লেখালেখি দিয়ে। বাংলাদেশে ফ্যাশন সাংবাদিকতার ভিত গড়ে দেয় ওই বিচিত্রা। পরে তিনি লেখাপড়া শেষ করে যোগ দেন ব্র্যাকের রেশম প্রকল্পে।
সেখান থেকে যোগ দেন গ্রামীণ উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে। পাট ও রেশম নিয়ে নানা নিরীক্ষা করেছেন। তার হাত ধরেই শুরু হয় গ্রামীণ উদ্যোগের প্রথম আউটলেট, মিরপুরের সনি সিনেমা হলের নিচে। তার ডিজাইন করা একটি পাঞ্জাবি নিয়ে ১৯৯৮ সালের ঈদে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়।
গ্রামীণে অন্যান্য প্রকল্পেও তিনি কাজ করেছেন। সেই সময়ে বিভিন্ন বিদেশি ডিজাইনারদের সাহচর্য তাকে সমৃদ্ধ করেছে। ঘুরেছেন বিভিন্ন দেশ। এরপর গ্রামীণের হয়ে তিনি তৈরি করেন সিল্কের পণ্য। সেসব পোশাক তখন পরেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপার মডেল ম্যান্ডেলা, স্পেনের রানি সোফিয়া, বেলজিয়ামের রাজকুমার। উপহার দেওয়া হয় বিল ক্লিনটনকে তার ঢাকা সফরে।
২০০২ সালে গ্রামীণ উদ্যোগের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে সেখান থেকে বের হয়ে এসে শুরু করেন বাংলার মেলা। এখন এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার সম্পর্কচ্ছেদ না হলেও তিনি সরাসরি সম্পৃক্ত নন। বরং পরে তিনি শুরু করেন স্টুডিও এমদাদ।
বেশ কিছুদিন চলার পর তিনি অসুস্থতার কারণে চলে যান বিরতিতে। এরই মধ্যে গত বছর ডিসেম্বরে শুরু করেন ‘মেধা’, ‘আমরাও পারি’ নামের একটি সংগঠন। মানুষের সৃজনশীলতার বাস্তবায়নই এ ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য।