কল্যাণ ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সবকিছুর বিকল্প আছে। ডিম যখন বেশি পাবেন সিদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেবেন, বহুদিন থাকবে। নষ্ট হবে না।’ মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) গণভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘দেশে নিত্যপণ্য নিয়ে একটা মৌসুমি ব্যবসা হয়। মজুদ আছে সরবরাহ আছে তবুও জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। যেমন-পেঁয়াজ, ডাব, কাঁচামরিচ। এমন অনেক পণ্য সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করে সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নিয়ে যাওয়া হয়। মন্ত্রীরাও বলেন সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যায় না। এই মৌসুমি ব্যবসায়ীদের নিরস্ত করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?’
প্রশ্নের পরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে চান যে সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না এমন কথা কে বলেছেন। জবাবে জানানো হয় বাণিজ্যমন্ত্রী ওই কথা বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বলেন, ‘ঠিক আছে আমি বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একটা শ্রেণি আছে তারা সবসময় ব্যবসা করে। তারা যখন আর্টিফিসিয়ালি দাম বাড়ায়, তখন আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নেই। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নেই। তারা বাধ্য দাম কমাতে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সিন্ডিকেট থাকলে সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা হতে পারে না। কে কত বড় শক্তিশালী সিন্ডিকেট, আমি জানি না। কিন্তু আমি দেখব যে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আমাদের দেশে একটা নিয়ম আছে যুগ যুগ ধরে। আমরা ছোটবেলায় দেখেছি শীতকালে যখন বাজারে শিম ওঠে কে কত বেশি দামে কিনতে পারে এটার একটা প্রতিযোগিতা চলত। দুইদিন পর দাম কমে যেত। আবার বর্ষাকালে কাঁচামরিচের দাম বাড়ে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাঁচামরিচ শুকনা করে রেখে দেওয়া যায়। পেঁয়াজ শুকিয়ে রেখে দেওয়া যায়। যেটার উৎপাদন বেশি হবে সেটা শুকিয়ে রেখে দিলে ব্যবহার করা যাবে। জীবনে কেউ কখনো ভেবেছে যে বর্ষাকালে শিম, লাউ, কপি গাজর, টমেটো খাবে। ভবিষ্যতে এগুলো রাখা, প্রসেস করা, চিলিং সিস্টেমে সংরক্ষণ করার বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা এখান থেকে চাল কিনতে চান। আমি বলেছি আমাদের ১৭ কোটি মানুষের খাবার দিতে হয় আগে, দেখব যদি উদ্বৃত্ত থাকে অবশ্যই আমরা দেব। আমাদের দেশ থেকে এখন অনেকেই তরকারি কিনতে চাচ্ছে, আমরা দিচ্ছি। এখন তো সুইজারল্যান্ডেও যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এজন্য আমি সবাইকে বলছি নিজেরা উৎপাদন করেন। প্রত্যেকে যদি কিছু উৎপাদন করতে পারে, তখন বাজারে ওপর নির্ভরশীলতা থাকে না। নির্ভরশীলতা এমনিতেই ভেঙে যাবে।’
‘কাঁচামরিচ গাছ থেকে ছিঁড়ে নিয়ে খাওয়ার আলাদা একটা টেস্ট আছে। ডিম যখন বেশি পাবেন সিদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেবেন, বহুদিন থাকবে। নষ্ট হবে না। সবকিছুর বিকল্প আছে। ডিম সিদ্ধ করে ডিপে রেখে দেন, ডিম ভালো থাকবে। রান্না করে, ভর্তা করে খাওয়া যাবে। আমরা রাখি খাই। এগুলো নিজে থেকে শেখা,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।