নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর পৌরসভার ৩ নম্বার ওয়ার্ডের ঘোপ জেল রোডের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। এই এলাকা দুটির মূল সড়ক ও কয়েকটি আঞ্চলিক বা গলি সড়কদের রাস্তার পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বাসা-বাড়ির ব্যবহৃত পানি সড়কসহ আশপাশে জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে। আবার পাশেই বহু বছরের পুরোনো সংস্কারহীন ড্রেন থাকলেও ড্রেনের আটকে থাকা ময়লা পানি উপচে পড়ে প্রায় সব ঋতুতেই জমে থাকে পানি। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় লোকজন। দীর্ঘদিন ধরে এর কোনো প্রতিকার না পেয়ে সম্প্রতি পৌরসভার মেয়র বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী। ড্রেন ব্যবস্থা দ্রুত সংস্কার না করলে পৌরসভার সকল প্রকার ট্যাক্স বন্ধ করার হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
ওয়ার্ডটির বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষক কামরুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা পৌরসভার বাসিন্দা হয়েও পৌরসেবা থেকে বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ওয়ার্ডের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গলিতে কোন ড্রেন নেই। ড্রেন না থাকাতে এই গলির প্রায় ৪০টি বাড়ি ও ৯০টি ফ্লাটে বসাবস করা এলাকাবাসীদের পানি রাস্তা, সড়কে জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি সেপটি ট্যাংকের পানিগুলো সড়কে। দুগন্ধ ও গিঞ্জি পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর ও জনপ্রতিনিধিদের বারবার বলার পরেও তারা কোন সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছেন না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোপ জেল রোডের বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে দিয়ে একটি গলি গিয়েছে। এই গলির ভিতরে কিছুদূর গেলেই দেখা মিলবে দুটি সড়ক। এই সড়কের পাশ দিয়ে প্রায় ৪০টি বাড়ি ও ৯০টি বহুতল দৃষ্টিনন্দন ফ্লাট রয়েছে। তবে এসব বাড়িরগুলোর সেই দৃষ্টিনন্দনতা কেড়ে নিয়েছে এই সড়কগুলো। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়াতে ইটের সলিং উঠে গেছে। সড়কের পাশ দিয়ে ড্রেন ব্যবস্থা না থাকাতে এই সড়কের পাশদিয়ে যত বাসাবাড়ির পানি সড়কের উপরে পড়ছে। আটকে থাকা ময়লা পানি উপচে পড়ে প্রায় সব ঋতুতেই জমে রয়েছে। এতে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।
হাবিবুর রহমান খান নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে দুই হাজার সালে বাড়ি করেছি। পৌরসভার বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও পৌরসভার কোন সুবিধা পাচ্ছি না। বাড়ি করার পর থেকেই এখানে কোন ড্রেন নাই। ফলে ময়লা পানির কারণে আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। এই ভোগান্তি বর্ষাকালে দ্বিগুন বৃদ্ধি পায়। এতো বছরে কতগুলো জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হলো তবে আমাদের সমস্যার কোন সুরহা হয়নি। কয়েক দফা স্মারকলিপি দিলেও মেয়র মহোদয় কোন হস্তক্ষেপ নেয়নি। এদিকে, ড্রেন ব্যবস্থার উন্নতির দাবিতে পৌরসভার মেয়র বরাবর সম্প্রতি এলাকাবাসীর সাক্ষরকরা স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গলিতে প্রায় সাড়ে চার শ’ লোকের বসাবস। এই এলাকায় পানি নিষ্কাশনের জন্য কোন ড্রেন নেই। ফলে এলাকার ভিতর পানি জলাবদ্ধতা হয়ে আছে। এই জলাবদ্ধতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে ও রাস্তার উপরে জমা হয়ে প্রচুর দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষকালে পানি জমে জলাবদ্ধতা তিন থেকে চার মাস স্থায়ী হয়। ফলে এমন অবস্থায় দ্রুত ড্রেন ব্যবস্থার দাবি জানান এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শেখ মোকছিমুল বারী অপু বলেন, ‘এখানকার বাসিন্দারা বাড়ি করার সময় পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী করেনি। ড্রেন করার জন্য আমি নিজেই প্রকৌশলী নিয়ে গেছি। জায়গার অভাবে ড্রেন করা যাচ্ছে না। তারপরও তাদের সমস্যা দূর করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। দ্রুতই তাদের সমস্যা সমাধান করা হবে।