কল্যাণ ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়ায় এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন বলছে, এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ গতকাল বৃহস্পতিবার কালবেলাকে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাজনীতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পর্যায়ে একটা আলোচনা হয়েছে। তবে কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি এখনো। সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে জানানো হবে।”
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে ফোন দিলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা কথা বলবেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “রাজনীতির বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্যরা মতামত দিয়েছেন। সেগুলো পর্যালোচনা করে শিগগিরই একটি সারসংক্ষেপ বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”
এদিকে ঢাবিতে রাজনীতি বন্ধের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে বলেছেন, “প্রাথমিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নতুন এক বাংলাদেশ সৃষ্টির অগ্রযাত্রা শুরু হোক আজ থেকে…।”
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সব প্রকার রাজনীতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন- এমন একটি সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। এই সংবাদটি আপাতত সঠিক নয় বলে জানা গেছে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান শিপন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে কথা না বলে এরকম সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক না। এখনও যেহেতু আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা আসে নাই। ফলে আমরা বিশ্বাস করি প্রশাসন এরকম অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নেবে না।”
অন্যদিকে এই সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত নেওয়ার নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক মাইন আহমেদ। তিনি বলেন, “এই সিন্ডিকেটের ১১ জনই আওয়ামী মদদপুষ্ট। তারা আগের সিন্ডিকেটের সদস্য। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নৈতিক ভিত্তি তাদের নাই। কারণ তারা বিভিন্ন সময় ফ্যাসিবাদের মতামত তৈরিতে কাজ করেছে।”
অবিলম্বে সব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বসে ছাত্র রাজনীতির সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাবির বেশ কয়েকটি হলে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। হয়েছে। আন্দোলনের মাঝেই গত ১৬ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হল কর্তৃপক্ষ ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন হল প্রাধ্যক্ষরা।
তখন ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা হয়েছিল শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, অমর একুশে হল, রোকেয়া হল, মহসীন হল, কুয়েত মৈত্রী হল, জহুরুল হক হল, শামসুননাহার হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও সুফিয়া কামাল হলে।