বকনা ও ষাঁড় বাছুর ক্রয়ে ঋণ দিচ্ছে সরকার
সুনীল ঘোষ: দেশজুড়ে বকনা ও ষাঁড় বাছুর কেনার ঋণ দিচ্ছে সরকার। প্রত্যেক উপকারভোগীর জন্য বরাদ্দ লাখ টাকার উপরে। প্রকল্পটির আওতায় রয়েছে যশোর ও মেহেরপুর। প্রতিমাসে জেলা দুটির ৪শ থেকে ৫শ’ জন ঋণ পাবেন। আগামী ৬ মাসের মধ্যে ৪২শ’ উপকারভোগী পর্যায়ক্রমে পাবেন ঋণের চেক। সরকারের প্রশংসনীয় এই প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দুধ ও মাংসের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
যশোর ও মেহেরপুর জেলায় ৪২শ’ উপকারভোগীর জন্য বরাদ্দ ৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে যশোরের ২ হাজার ৫শ’ জন ও মেহেরপুরের ১ হাজার ৭শ’ জন ঋণ পাবেন। প্রত্যেককে দেয়া হবে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। ঋণের ৮০ হাজার টাকায় দুটি ষাঁড় অথবা একটি উন্নত জাতের বকনা বাছুর কিনতে হবে। উদ্বৃত্ত ২৫ হাজার টাকা পশুর খাদ্য ক্রয়ে ব্যয় করতে পারবেন ঋণ গ্রহীতা। চেক বিতরণ থেকে শুরু করে পশু ক্রয় ও সার্বক্ষণিক তদারকি করবেন সমবায় কর্মকর্তারা। পাশাপাশি সুবিধাভোগীদের অঞ্চল ভিত্তিতে গ্রুপ ও পশুর তথ্য সম্বলিত ফরম নির্ধারণ এবং বাছুর ক্রয়ে কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য সাফ জানিয়ে দিয়েছেন-প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনো রকম অনিয়ম-দুর্নীতি করতে দেয়া হবে না। পশু ক্রয়ে কোনো মধ্যস্বত্তভোগী থাকবে না। অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের সবপথ বন্ধ রেখে প্রকল্পের কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে হবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের তত্ত্বাবধানে সরকারের মহতী এই কার্যক্রমকে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
যশোর জেলার বিভিন্ন গ্রামের অনন্ত ১০/১২ জন কৃষক অভিযোগ করেছেন- উপকারভোগীর তালিকা প্রণয়নে অনিয়ম হয়েছে। দলীয় লোকজনের বাইরের কেউ তালিকাভুক্ত হতে পারেনি। সরকারের এই উদ্যোগকে মহতী দাবি করে তারা বলেন কোন রকম অনিয়ম-দুর্নীতি না হলে প্রকল্পটি গ্রামীণ জনপদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বদলে যাবে অনেক পরিবারের ভাগ্য। তারা বলেন-অতীতের অভিজ্ঞতা হতাশাব্যঞ্জক। একটি বাড়ি একটি খামার ও সরকারি বাড়ি-ঘর বিতরণ কার্যক্রম নিয়েও রাজনীতিকরণ করা হয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব কবির খান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে সমবায় কর্মকর্তারা। বিস্তারিত জানতে তিনি সমবায় অফিসারের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
মুঠোফোনে কল করা হলে জেলা সমবায় কর্মকর্তা এসএম মনজুরুল হক রিসিভ করেননি।
যশোর সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রনজিত কুমার দাশ বলেন, যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রণয়ন ও তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কোনো রকমের অনিয়ম হয়নি। চলতি মাসের শেষদিকে চেক বিতরণ ও পশু ক্রয় কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এরই মধ্যে ৫শ’ জনের চেক প্রস্তুত হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা চেক বিতরণের পাশাপাশি বকনা ও ষাঁড় বাছুর ক্রয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি করবে।