নিজস্ব প্রতিবেদক
থানা পুলিশের কাছে বারবার অভিযোগ করেও প্রতিকার না পাওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সুমাইয়া জামান নামে এক নারী। তিনি তালাকপ্রাপ্ত স্বামী ও তার পোষ্য সন্ত্রাসীদের হাতে একাধিকবার নির্যাতনের শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত আদালতে মামলা করেছেন। আদালতের নির্দেশে শুক্রবার যশোর কোতোয়ালি থানা মামলাটি রেকর্ড করেছে।
তবে পুলিশিং সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) বেলাল হোসাইন বলেছেন, এই মামলাটি খুবই গুরুত্বসহকারে দেখভাল করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার নুরপুর গ্রামের ইনতাজ আলী, তার দুই ছেলে তাজউদ্দিন আহম্মেদ সাজু ও রাজু, মহি মন্ডলের ছেলে আজাম ন্ডল ও শুকুর আলীর ছেলে নাসিম। বাদী সুমাইয়া জামান যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের মশিকুল ইসলামের মেয়ে।
ভুক্তভোগী সুমাইয়া জামান জানিয়েছেন, তাজউদ্দিন আহম্মেদ সাজুর সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। বনিবনা না হওয়ায় সাজুকে ২০২১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তালাক প্রদান করেন তিনি। ২০২১ সালের ৭ মার্চ আবিদ হাসান হৃদয় নামে আরেকজনের সাথে তার (সুমাইয়া জামান) দ্বিতীয় বিয়ে হয়। কিন্তু তালাকের বিষয়ে সন্তুষ্ট না হয়ে তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার জন্য হুমকি ও ষড়যন্ত্র করতে থাকেন সাজু। সে কারণে সুমাইয়া জামান ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাজুর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় ৪৩৬ নম্বর একটি জিডি করেন। এরপর সাজুর নেতৃত্বে তার দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। ২০২২ সালেল ১৭ জুন বিষয়টি কাশিমপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর লিয়াকত হোসেন টিপুর মধ্যস্থতায় মিমাংসা হয়। এরপরও সাজুর ষড়যন্ত্র থামেনি। গত ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি (বাদী) ও তার স্বামী যশোর শহর থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেন। পথিমধ্যে ক্যান্টনমেন্ট খয়েরতলা বাজারে পৌছানো মাত্র পরিকল্পিতভাবে সাজুর চালিত (যশোর-ফ-১১-০২০৮) নম্বর সিএনজিতে আসামিরা এসে তাদের পথরোধ করে। এরপর তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এলে আসামিরা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের দুইজনকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে থানায় গেলে মামলা নিয়ে অস্বীকার করে পুলিশ। বিভিন্ন সময়ে আসামি সাজুর হামলা এবং হুমকির কারণে সুমাইয়া জামান ইতিপূর্বে তিনবার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া একবার জিডি করেছেন। তাছাড়া সুমাইয়ার বর্তমান স্বামীও দুইবার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর ছয়টি অভিযোগ ও জিডিতে কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। সর্বশেষ দিনের ঘটনায়ও থানায় অভিযোগ দেন। কিন্তু কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ৪ ডিসেম্বর আদালতে একটি অভিযোগ সুমাইয়া জামান। আদালতের নির্দেশে গতকাল মামলাটি রেকর্ড করেছে থানা পুলিশ।
সুমাইয়া জামান আরো জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশে মামলাটি রেকর্ড হলেও এখন পুলিশ হয়তোবা কোন আসামি আটক নাও করতে পারে। আসামিরা আরো বেপরোয়া হয়ে তাদের ক্ষতি করতে পারেন বলে তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন।
এই ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাককে মুঠোফোনে জানানোর পর কোন জবাব না দিয়েই ফোনটি কেটে দেন।