নিজস্ব প্রতিবেদক
আমার ভ্যাট আমি দেব, কেনার সময় চালান নেব- এ প্রতিবাদ্যে যশোরে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ পালিত হয়েছে। রোববার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট যশোরের কার্যালয়ে ভ্যাট সম্পর্কে জনগণকে আরো সচেতন এবং উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে সেমিনার ও সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতাদের সম্মাননা দেয়া হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আবদুল হাকিম। কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট যশোরের কমিশনার কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভ্যাট কমিশনারেট যশোরের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সেলিম শেখ, ও ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিম অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খবির উদ্দিন আহমেদ।
এদিন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট যশোরের আওতায় তিনটি ক্যাটাগরিতে দশ জেলার সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী ২৬ প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রপরিচালনাসহ রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে রাজস্ব একটি অপরিহার্য উপাদান। রাষ্ট্রের নানাবিধ ব্যয় নির্বাহ এবং উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তার সিংহভাগই আসে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব থেকে। আর এই রাজস্বের অন্যতম উৎস হচ্ছে ভ্যাট। একটি উন্নত দেশ গড়তে অক্সিজেন হিসাবে কাজ করে ভ্যাট। ভ্যাট দেওয়া এখন অনেক সহজ হয়েছে। তবে আগে আইন কঠিন ছিল। প্রয়োজনে আইন আরও সহজ করা হবে। তাই সবাইকে বলব, নির্ভয়ে ভ্যাট দিন।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের দেশে ভ্যাট ১৫ শতাংশ। কিন্তু অন্যান্য দেশে ১২ শতাংশ। এটা সরকারকে ভাবতে হবে। কেননা ভ্যাট ভোক্তারা দিয়ে থাকেন। পণ্যের সাথে ভ্যাট যুক্ত করলে সেই পণ্যে দাম বেড়ে যায়। ফলে ক্রেতারা সেটি গ্রহণ করেনা। যারা রাজস্ব আদায় করেন, তাঁদের ভাবতে হবে, কীভাবে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আরও বাড়ানো যায়, জনগণকে রাজস্ব দিতে উদ্বুদ্ধ করা যায়। সে জন্য কর্মকর্তাদের মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে। কর ও ভ্যাট নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি আছে। এই ভীতি কাটাতে হবে। দেশ গড়ার ভ্যাট আদায়ে সবার দুয়ারে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জনগণকে ভ্যাট দিতে উৎসাহিত করতে উৎপাদন, সেবা ও ব্যবসায়ী খাতে ২০২২-২৩ বছরে ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে সেরা ভ্যাটদাতার সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। সেরা করদাতা প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। এরমধ্যে উৎপাদন ক্যাটাগরিতে কুষ্টিয়ার মডার্ণ প্লাইউড এন্ড উড প্রোসেসিং কোম্পানি লিমিটেড, গোপালগঞ্জের জেকে পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, চুয়াডাঙ্গার মেসার্স বঙ্গ পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ঝিনাইদহের পিসকো ইংক কোম্পানি লিমিটেড, ফরিদপুরের শেফ ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মাগুরার আরকে ডোর ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মেহেরপুরের আল কাঈফ মটরস ও যশোরের আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি লিমিটেড, ব্যবসা ক্যাটাগরিতে কুষ্টিয়ার জয়দেব পাল এন্ড সন্স, গোপালগঞ্জের মেসার্স কাজী সৈয়দ আলী, চুয়াডাঙ্গার মেসার্স শহিদুল হক মোল্লা, ঝিনাইদহের এআর ট্রেডার্স, নড়াইলের কাস ট্রেড, ফরিদপুরের নকশীকাঁথা, মাগুরার মেসার্স মুসলিমা এন্টারপ্রাইজ ও যশোরের ঝিকরগাছার মেসার্স আজিজুর রহমানকে সম্মাননা দেয়া হয়।
এছাড়া সেবা ক্যাটাগরিতে কুষ্টিয়ার দিশা হোটেল এন্ড রেস্তোরা, গোপালগঞ্জের শরীফ ফার্নিচার, চুয়াডাঙ্গার হোটেল সাহিদ প্যালেস, ঝিনাইদহের জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্ক এন্ড রিসোর্ট, নড়াইলের নিরিবিলি পিকনিক স্পট, ফরিদপুরের সেরিন গার্ডেন, মাগুরার সুগন্ধা সুইট, মেহেরপুরের বাসুদেব গ্র্যান্ড সন্স, যশোরের হোটেল জাবীর প্যারাডাইস ও রাজবাড়ির মেসার্স নির্মল মিষ্টান্ন ভান্ডার সম্মাননা পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বত্ত্বাধিকারী ও প্রতিনিধিরা অতিথিবৃন্দের হাত থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র গ্রহণ করেন।