ঢাকা অফিস
দেশের জনসাধারণের স্বার্থ ও দেশীয় শিল্পের সুরক্ষায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ওপর শুল্ক, ভ্যাট ও কর আরোপ বা ছাড়ের প্রস্তাব এসেছে বাজেটে। যার সামগ্রিক প্রভাব পড়বে দেশের বাজারে। এর ফলে কিছু কিছু পণ্য বা সেবার দাম বাড়তে পারে, আবার কিছু কিছু পণ্য বা সেবার দাম কমতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। বাজেটে যেসব পণ্য ও সেবার দাম কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলো হলো—
বিমানের ইঞ্জিন
বিমানের স্পার্ক ইগনিশন এয়ারক্যাফট ইঞ্জিন আমদানিতে মূসক অব্যাহতি রয়েছে। এবার টার্বো জেট ইঞ্জিন আমদানিতে মূসক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ কমবে বিমানের ইঞ্জিন কিনতে।
মাংস
আগামী বাজেটে মাংস ও মাংসজাত পণ্যকে নিত্যপণ্যের ক্যাটাগরিতে আনার প্রস্তাব আসতে পারে। একই সঙ্গে এই পণ্যের উৎসে অগ্রিম আয়কর ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হতে পারে। যার প্রভাবে মাংসের দাম কমতে পারে।
দেশে উৎপাদিত বৈদ্যুতিক এলইডি বাল্ব ও সুইস-সকেট
উৎপাদন উৎসাহিত করতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বৈদ্যুতিক এলইডি বাল্ব ও সুইস সকেট আমদানি করতে শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে ২৫ শতাংশ রয়েছে। এবারের বাজেটে শুল্ক ও সম্পূরক শুল্কহার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব আসতে পারে। যার প্রভাবে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এলইডি বাল্ব ও সুইস-সকেটের দাম তুলনামূলক কমতে পারে।
ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জ
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। ফলে তাদের ডেলিভারি চার্জ কমবে।
মিষ্টিজাতীয় খাবার
বাজেটে দাম কমার তালিকায় রয়েছে মিষ্টি। এবার মিষ্টির ওপর ভ্যাট কমানো হতে পারে। ভ্যাট বিদ্যমান ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করছে সরকার। পাশাপাশি কিছু প্যাকেটজাত মিষ্টিজাতীয় পণ্যের দামও কমতে পারে।
অভিজাত বিদেশি পোশাক
আসন্ন বাজেটে অভিজাত বিদেশি কাপড় আমদানির ওপর শুল্ক কমানো বা অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। ফলে বিলাসবহুল কাপড়ের শুল্ক যদি কমানো হয়, তা হলে কম দামে পাওয়া যাবে এসব পোশাক। এসব পণ্যে শুল্ক-কর ২০-২৫ কমিয়ে ৫ থেকে ১০ করা হতে পারে।
ওষুধ ও মেডিকেল সরঞ্জাম
বাজেটে আরও ওষুধ ও মেডিকেল সরঞ্জাম উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক রেয়াত দিতে পারে সরকার। অ্যান্টি-ক্যানসার এবং অ্যান্টি-ডায়াবেটিস ওষুধের কাঁচামাল আমদানিকে শুল্ক মওকুফের আওতায় আনা হবে।
স্যানিটারি ন্যাপকিন
একই সঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী হিসেবে স্যানিটারি ন্যাপকিন, ডায়াপার ও টয়লেট্রিজের কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদও এক বছর বাড়তে পারে। এসব কিছুই জনস্বাস্থ্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য অপরিহার্য। স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পের আরও বিকাশে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত স্যানিটারি প্যাড ও ডায়াপারের কাঁচামালের ক্ষেত্রে ভ্যাট ছাড় অব্যাহত রাখতে পারে।
সাবান ও শ্যাম্পু
সাবান ও শ্যাম্পুর কাঁচামাল লাবসা ও এসএলইস-এর উৎপাদন পর্যায়ে বর্তমানের হ্রাসকৃত ৫ শতাংশ ভ্যাট সুবিধা আরও এক বছর বাড়ানো হচ্ছে। এতে কমতে পারে পণ্যগুলোর দাম।
কৃষি যন্ত্রপাতি
বাজেটে শুল্কছাড়ের কারণে কমতে পারে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রপাতি তৈরির সরঞ্জামের দাম।