কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
কোটচাঁদপুর উপজেলায় অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য সৌদিআরব সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো বেশির ভাগ দুম্বার মাংস জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অফিস সূত্র জানায়, গত ১১ জানুয়ারি সৌদি সরকারের দেওয়া ১৪ কার্টন দুম্বার মাংস বিতরণের তালিকা অনুযায়ী পৌর মেয়র ১ কার্টন, পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ১ কার্টন করে ৫ কার্টন মাংস পেয়েছেন। এছাড়া পৌরসভার ৬টি ও ইউনিয়নের ১০ টি এতিমখানা ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে ৮ কার্টন মাংস বিতরণ করা হয়।
অভিযোগকারীদের তথ্য মতে, প্রতি কার্টনে ১০ পিস দুম্বার মাংস ছিল। তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের দপ্তর থেকে প্রতি কার্টনে সর্বোচ্চ ৪ পিস করে মাংস ছিল বলে জানানো হয়। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শিদের অভিযোগ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার ৮ কার্টন থেকে ১৬ টি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় ২ পিস করে মোট ৩২ পিচ দুম্বার মাংস দেওয়া হয়। বাকি ৪৮ পিস মাংস কর্তৃপক্ষ পছন্দের মানুষসহ নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাঙ্গি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, অল্প পরিমাণ মাংস পাওয়ায় বাইরের কাউকে না দিয়ে সকল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, চৌকিদার, সচিব ও উদ্যোক্তাদের মাঝে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম সবুজ বলেন, দুম্বার মাংস আমার অধিনস্থ সকলের মাঝে ভাগ করে দিয়েছি।
সাফদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, আমি দুস্থদের মাংসে হাত দেইনি। উপজেলা থেকে এনেই বন্টন করে দিয়েছি। তবে কাকে বা কোন প্রতিষ্ঠানে দিয়েছেন তা বলেন নি। তবে, ওই পরিষদের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, দুম্বার মাংস ইউনিয়ন পরিষদে আসেনি। তবে চৌকিদারদের কাছে শুনেছি তারা মাংস পেয়েছে।
দোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তরিকুল ইসলাম বলেন, দুম্বার মাংস সকল ইউপি সদস্য, চৌকিদারসহ পরিষদের অন্যান্যদের মাঝে ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে। বলুহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলছেন, আমি মাংস নিয়ে এতিমখানায় বিতরণ করেছি।
পৌর মেয়র সহিদুজ্জামান সেলিম বলেন, পৌরসভার অস্থায়ী দরিদ্র কর্মচারী ও সাধারণ দুস্থদের মাঝে এ মাংস বিতরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা যথাযথ ভাবে দুম্বার মাংস বন্টন করেছি। জনপ্রতিনিধিরা যদি কোন অনিয়ম করে থাকে তাহলে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ধাপে দুম্বার মাংস আসার কারণে কোটচাঁদপুরে আসা কার্টনে মাংসের পরিমাণ কম থাকতে পারে ।