বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী মুন্নিসহ ১০ জন আটক
যাত্রী কম থাকায় ছন্দপতন দূরপাল্লার বাস চলাচলে
কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি-জামায়াতের দ্বিতীয় দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিন রোববার যশোরে তেমন প্রভাব পড়েনি। বিভিন্ন রুটে স্বাভাবিক সময়ের মতো গাড়ি চলাচল করছে। অভ্যন্তরীণ রুটের সব বাস চলাচল করছে স্বাভাবিক নিয়মে। যাত্রী কম থাকায় কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে ঢাকাসহ দূরপাল্লার বাস চলাচলে। অন্যদিনের মতোই দোকানপাট, মার্কেট ও বিপণিবিতান খোলা ছিল। খোলা ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস আদালত।
অবরোধকে কেন্দ্র করে জেলায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সড়কগুলোতে সতর্ক অবস্থায় লক্ষ্য করা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশের সঙ্গে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিহত করতে টহল দিতে দেখা গেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এদিকে অবরোধের প্রথমদিনে যশোরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য সাবিরা নাজমুল মুন্নিসহ ১৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার মধ্যে রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসব নেতাকর্মীদের আটক করে পুলিশ। এদিন বিকেলে তাদেরকে নাশকতার বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
অবরোধ কর্মসূচীর দ্বিতীয় দফার প্রথম দিনে যশোরে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যশোর-নড়াইল মহাসড়ক, যশোর-খুলনা মহাসড়ক, শহরের হাজী মহসিন সড়ক, ঝুমঝুমপুর সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি। তবে এসব মিছিল শুরু হয়ে কয়েকশ গজ অতিক্রম করেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এদিকে অবরোধ চলার সময় দূরপাল্লার কোনো গণপরিবহনের দেখা না মিললেও অটোরিকশা, ব্যক্তিগত ও মালবাহী যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সাথে শহরের বিভিন্ন স্থানে শান্তি মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রোববার মধ্যে রাত থেকে অভিযান চালায় যশোর পুলিশ ও র্যাব। রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নি, জেলা যুবদলের সহ-কৃষি সম্পাদক সানি আহমেদ, নগর যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মারুফ বিল্লাহ সানি, বসুন্দিয়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য নুর মোহাম্মদ, রামনগর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মশিয়ার রহমান মেম্বর, পৌরসভার ৮ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপি নেতা সুলতান আহমেদ, ১ নাম্বার ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, ৭ নাম্বার ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক রাব্বি হোসেন মেহেদী ও যুবনেতা মোহাম্মদ বাবুসহ অন্তত ১০ জন নেতাকর্মীকে র্যাব ও পুলিশ আটক করে।
এছাড়া বাঘারপাড়া উপজেলায় দোহাকুলা ইউনিয়নের ৫ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ও বন্দবিলা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক হাদিউজ্জামান, মনিরামপুর উপজেলায় খানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ফারুক হোসেন, নেহালপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান ও হরিহরনগর ইউনিয়ন যুবদল নেতা মমিনুর রহমান আটক হয়েছেন। তাদেরকে নাশকতার বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, অবরোধের নামে নৈরাজ্য করতে এলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিঘিœত হয় এমন কিছু মেনে নেওয়া হবে না। এই জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। কেউ যদি কোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা করেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।