দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে সব মানুষ চাপের মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ হাফিয়ে ওঠছে। তারা যা আয় করছে তাতে কুলাচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল যেন জিনিসের দাম না বাড়ে। কিন্তু দাম বেড়েই গেছে। প্রতিবারই এমনটাই দেখা যায়। রোজা আসলে যেন দাম না বাড়ালে ব্যবসায়ীরা শান্তি পায় না। এ বিষয়ে অনেকে বলতে পারেন চাহিদা বাড়লে দাম তো বাড়বেই। এটা কোনো যৌক্তিক কথা নয়। সংকটে দাম বাড়তে পারে। কিন্তু রোজা আসলেই সংকটটা সৃষ্টি হয় কি করে। এ ক্ষেত্রে বলা যায় সংকটটা কৃত্রিম। মানুষের গলা কেটে ফায়দা লোটার জন্য এই সংকট সৃষ্টি করে। অথচ রমজানে মানুষের সহনশীল হবার কথা ছিল। কিন্তু ওই যে কথা আছে ‘চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী’।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে কী করতে হবে সেটাও সবার জানা। প্রশ্ন হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো তাদের করণীয় যথাযথভাবে পালন করছে কিনা। কোনো ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মজুদ করা কোনো পণ্য উদ্ধার করে বাজারজাতের ব্যবস্থা হয়েছে বলে জানা যায় না। রমজানে অবৈধ মজুদের জন্য কোনো ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়নি। বাজারে মানসম্মত পণ্যের সরবরাহ বাড়িয়ে টিসিবি পণ্যের মূল্যে লাগাম টানতে পারেনি। বাজারে মূল্য তালিকা টাঙানো বা কার্যকর করা যায়নি। ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজির উৎসব বন্ধ করা যায়নি। যানজট আছে আগের মতোই। এতসব ব্যর্থতার পর পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে সেটা বিশ্বাস করা বোকার স্বর্গে বাস করার নামান্তর।
যাদের মজুদদারী বন্ধ করার দায়িত্ব তারা সেটা না করে ব্যবসায়ীদের অবৈধ সুযোগের ভাগিদার হচ্ছে বা চাঁদাবাজি বন্ধ করার দায়িত্ব যাদের তারা চাঁদার ভাগ নিচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। টিসিবির পণ্য সব শ্রেণির ভোক্তার চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। সর্ষের মধ্যে যদি ভুত থাকে তাহলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ হবে কীভাবে। সরকারকে আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আদায় করতে হবে। সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি দূর করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নইলে কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে পুজিবাজার কোনোটাই সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।
দেশের মানুষ আজ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ চাপে চিড়ে চ্যাপটা হয়ে গেছে। এ সমস্যায় কেউ ভালো নেই। মানুষের স্বার্থে তাই যে করেই হোক দ্রব্যমূল্য সহনশীল মাত্রায় আনতে হবে।