অভয়নগর প্রতিনিধি: নওয়াপাড়া ধান হাটায় মৌসুমের শুরুতে কৃষকের কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ইজারাদারের নির্ধারিত খাজনা না দেওয়ায় আড়ৎদারেরা ধান কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। অনেক কৃষক দেনা পরিশোধের জন্য ধান বিক্রি করতে এসেছিলেন। কিন্তু নিরূপায় হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলা সদরে অবস্থিত নওয়াপাড়া ধান হাটা। এ হাটে প্রায় ৫০ জন আড়ৎদার রয়েছেন। বোরো মৌসুমে এখানে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ হাজার মণ ধান কেনাবেচা হয়। নওয়াপাড়া পৌরসভা প্রতিবছর দরপত্রের মাধ্যমে ধানহাটের ইজারাদার নির্ধারণ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আড়ৎদার বলেন, আমরা প্রতিবছর পৌরসভা থেকে ধানহাট ইজারা দিয়ে আসছি। আমারা এ যাবৎ কৃষকের কাছ থেকে কোন খাজনা নেয়নি। হঠাৎ করে এ বছর (১লা বৈশাখ) থেকে আড়ৎদারদের বাইরে জিহাদ হোসেন নামে একজনের নামে হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। ওই ইজারাদার তার লোকজন নিয়ে শনিবার হাটের দিন আমাদের ধান কেনাবেচা করতে বাধা দেয়। তারা দাবি করেন, প্রতিমণ ধানে কৃষক ও আড়ৎদার মিলে ২৪ টাকা হারে খাজনা দিতে হবে। এতো টাকা খাজনা দেওয়া আড়ৎদার ও কৃষকের পক্ষে কষ্টকর ব্যাপার। তাই আমরা খাজনা কম নেওয়ার জন্য দাবি করেছি। কিন্তু ইজারাদার তা মানেনি। তিনি ধার্যকৃত ইজারা না দিলে ধান কেনাবেচা বন্ধ রাখতে বলেছেন। আমরা নিরূপায় হয়ে ধান কেনা বন্ধ করে দিয়েছি।
ইজারাদার পক্ষের কয়েকজন ধান হাটায় অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজনের সাথে কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, আমি পৌরসভা থেকে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে ধান হাটের ইজারা পেয়েছি। পৌরসভার ইজারার চার্ট দেখে আমি খাজনা নিচ্ছি। প্রতি কুইন্টাল (১০০ কেজি) ধান যে বিক্রি করবে, তার কাছ থেকে ১২ টাকা এবং যে ক্রয় করবে তাকেও ১২ টাকা হিসাবে খাজনা দিতে হবে।
ধানহাট ঘুরে দেখা যায়, কয়েকজন ইজারাদারের লোক ধান হাটে অবস্থান করছেন। আড়ৎদারেরা আড়ৎ বন্ধ করে বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। কৃষকেরা ধান নামিয়ে বসে আছেন, কোন ক্রেতা নেই।
৯ মণ ধান বিক্রি করতে এসছেন শ্রীধরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল গফুর । তিনি বলেন, আমি ধান বিক্রি করে ক্ষেতমজুরের টাকা দেবো ও ঈদের কেনাকাটা করবো। হাটে ধান বিক্রি করতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন বলেন, ধান হাটা পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় এর খাজনা নির্ধারণ করবে মেয়র সাহেব। এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।