দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি বেসরকারি সম্পত্তি দখল করছে এক শ্রেণির দকলবাজরা। তারা এতটাই বেপরোয়া যে কোন পরোয়া করছে না। দখল করে তা আবার ভাড়া দিয়ে টাকাও আয় করছে। সময়ে সময়ে এ সব বেআইনী দখলদার উচ্ছেদ করাও হয় কিন্তু অল্প সময় না পেরোতেই আবার দখল শুরু করে। বেআইনী দখলের একটি সর্বশেষ প্রতিবেদন সম্প্রতি দৈনিক কল্যাণে প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয় যশোরের নওয়াপাড়া রেলওয়ের ভূমি রক্ষণাবেক্ষণে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় অবৈধভাবে স্থায়ী, অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে বহাল তবিয়তে ব্যবসা বাণিজ্যসহ রেলওয়ের জায়গা ভাড়া দিয়ে হাট-বাজার পরিচালনা করছে। এতে একদিকে রেলওয়ের ভূমি বেহাত হচ্ছে, পাশাপাশি রেলওয়ের চলাচলে বাড়ছে ঝুঁকি।
রাজঘাট থেকে ভাঙ্গাগেট পর্যন্ত রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখল করে মার্কেট, নামে-বেনামে রাজনৈতিক কার্যালয়, ওয়েব্রিজ, বসত বাড়ি, সার-কয়লার ড্যাম্প, দোকানঘর এমন-কি নিয়মিত বসছে হাট-বাজার। আর এসকল অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে রেলওয়ে নিরাপত্তায় নিয়জিত আরএনবি কয়েকজন সদস্য।
রেলওয়ের জায়গার ওপর স্থায়ীভাবে যে কোন স্থাপনা নির্মাণে বিধি নিষেধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। রেলওয়ে মালামাল আনলোড করে টাকার বিনিময়ে রেলওয়ে পাটির পাশেই ড্যাম্প করা হচ্ছে। অন্যদিকে রেলওয়ে ওয়াগনের মালামাল লোড-আনলোড করার জন্য ফেরিঘাট, নোনা ঘাট রেলওয়ে পাটির পাশ দিয়ে অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করেছে অভয়নগর ট্রান্সপোর্ট, সঞ্জয় ট্রেডিং, পোটন ট্রেডিংসহ বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো ওই এলাকার রেল পাটি ভরাট করে সেখানে গাড়ি পার্কিং করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, স্লিপারের ১০ ফুটের মধ্যে কোন স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেয় না রেলওয়ে। তবে কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চলছে এ কাজটিও। যারা এমন কাজ করছে তারা বলছে, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে অনুমতি নিয়েই তা করা হচ্ছে।
রেলওয়ের সম্পত্তি এভাবে বেদখল হলে দুর্ঘটনারও আশংকা থাকে। দুর্ঘটনা ঘটছেও। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে এ আশংকা দূর করতে হবে। এ দিকে কর্তৃপক্ষের উদাসীন থাকা মোটেই উচিত নয়। সরকারি সম্পদ রক্ষা করা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। দেশের স্বার্থে কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙবে বলে আমরা মনে করি।