নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে সাড়ে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানি শোধনাগারটি পৌরবাসীর সুপেয় পানি সরবরাহে কোন কাজেই আসছে না। সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের বাস্তবায়িত পানি শোধনাগারটি তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এতে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কটে আছে পৌরবাসী।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্য মতে, নড়াইল সদর পৌরসভার বাসিন্দাদের বিশুদ্ধ পানির যোগান দিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের পক্ষ থেকে এ পানি শোধনাগারটি ২০১৯ সালে বাস্তবায়ন হয়। নড়াইল শহরের হাতির বাগান এলাকায় ৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩৫০ ঘনমিটার ক্ষমতা সম্পন্ন ভূগর্ভস্থ এ পানি শোধনাগার ঐ বছরের ১৯ নভেম্বর নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পানি শোধনাগারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে সরেজমিনে গেলে এটি তালাবন্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত পৌরসভার পাম্প চালক রতন কুমার দাস এসে তালা খুলে পানি শোধনাগারটি ঘুরিয়ে দেখান। চারপাশে মাকড়সার জাল আর ধুলা ময়লার পুরু স্তর দেখে সহজেই বোঝা যায় দীর্ঘদিন এখানে কারো পদ চিহ্ন পড়েনি। ব্যাক ওয়াশ ট্যাংক, সেফটি ট্যাংকসহ পানি সংরক্ষণাগারের প্রতিটি কম্পার্টমেন্টে জমে থাকা পানি নিকষ কালো বর্ণ ধারণ করেছে। তাতে বাসা বেঁধেছে নানা ধরনের পোকামাকড়। সর্বত্রই ময়লা আবর্জনা জমে আছে।
পাম্প চালক রতন কুমার দাস জানান, উদ্বোধনের পরে কয়েক মাস না যেতেই এটি বন্ধ হয়ে যায়। এটি সচল করতে বিভিন্ন সময় কয়েক বার চেষ্টা করেও সব চেষ্টা বিফলে গেছে। এখানকার পাম্প, পাইপ, মটরসহ বেশিরভাগ মেশিনপত্র বিকল হয়ে আছে। বিদ্যুৎ বিলের ঝক্কি এড়াতে বেশ কিছু দিন হলো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।
পৌরবাসী বলছে, পানি শোধনাগারের সুপেয় পানি পেতে এক সময় তাদের মনে আশা জাগালেও কিছুদিন না যেতেই পানি সরবরাহ থেমে গিয়ে পৌরবাসীর সে আশা নিরাশায় পরিণত হয়েছে।
পানি শোধনাগার নির্মাণে বিপুল অংকের অর্থ অপচয় না করে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে আরও কয়েকটি পানির পাম্প বসালে পৌরবাসীর পানি সরবরাহ সহজতর হতো বলেও অনেকে অভিমত দেন।
মানহীন মেশিনপত্রর সমন্বয়ে পানি শোধনাগারটি বাস্তবায়ন করে তৎকালীন পৌর কর্তৃপক্ষকে গছিয়ে দেয়া হয়, যার সুফল পৌরবাসী বেশি দিন ভোগ করতে পারেনি অভিযোগ করে মেয়র আঞ্জুমান আরা জানান, এটি সচল করতে তিনি কয়েক বার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানে হয়েছে বিকল মেশিনপত্র প্রতিস্থাপন করা গেলে এটি সচল করা সম্ভব বলেও পৌর মেয়র জানান।
এ ব্যাপারে এস এম আবু সালেহ জানান, পানি শোধনাগারটি বাস্তবায়ন পরবর্তী পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যস্ত করা হয়েছে। তথাপিও পৌর কর্তৃপক্ষ কোন সহযোগিতা চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেয়া হবে।