নিজস্ব প্রতিবেদক
সাত দিনের নবজাতককে অপহরণ করে মুক্তিপণ চেয়েছিলেন রুবেল শেখ (৩৫) ও তানিয়া আফরোজ (২৩) দম্পতি। শুক্রবার রাতে তাদের যশোর জেলার অভয়নগর থানার আমতলা এলাকা থেকে আটক করে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে অপহৃত নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানান, ঢাকা জেলার ধামরাই থানার ঢুলিভিটা এলাকার বাসিন্দা মিলি আক্তার অন্যের বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করেন। গর্ভাবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র চলে যাওয়ায় অসুস্থ শরীর নিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন তিনি। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন মিলি। তার অসুস্থতার সময় গত দেড় দুই মাস ধরে পরিচিত রুবেল ও তানিয়া নিয়মিত খোঁজখবর ও নানা সহযোগিতার হাত বাড়ায়। এ সময় তাদের সঙ্গে মিলির সখ্য গড়ে ওঠে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে রুবেল ও তার স্ত্রী তানিয়ার কাছে নবজাতক সন্তানকে রেখে ওষুধ আনতে বাইরে যান মিলি। এই সুযোগে নবজাতককে নিয়ে পালিয়ে যান রুবেল-তানিয়া দম্পতি। পরবর্তীতে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। না পেলে খুলনার রূপসা নদীতে ফেলে হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মিলি আক্তার।
আরও পড়ুন:গরম না আসতেই যশোরে লোডশেডিং, ভোগান্তি শুরু
গ্রেপ্তার রুবেল ও তার স্ত্রী র্যাবকে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ২ থেকে ৩ মাস ধরে ঢুলিভিটা বাজার এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছেন। রুবেল ধামরাইয়ের ঢুলিভিটার বাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকান ও মানুষজনের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ করতেন না। পাওনাদাররা ধার পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকায় রুবেল ঢুলিভিটা এলাকা থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। পাশাপাশি ভুক্তভোগীর সঙ্গে সু-সম্পর্ক থাকায় কৌশলে ভুক্তভোগী মিলি আক্তারের নবজাতক শিশুকে অপহরণের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে। পরে সুযোগ বুঝে নবজাতক শিশুটিকে নিয়ে বের হয়ে যান। অহরণকারী দম্পতি র্যাবকে আরও জানায়, ধামরাই এলাকা থেকে প্রথমে বাসযোগে তারা খুলনায় যায়। সেখানে আত্মগোপনের জন্য তারা সুবিধামতো ভাড়া বাসা খুঁজতে থাকেন। পরবর্তীতে খুলনার অদূরে রূপসা নদীর অপর পাশে যশোরের অভয়নগরের আমতলা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। এ সময় বিভিন্নভাবে শিশুটির মাকে মুক্তিপণের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এরই মধ্যে নবজাতক শিশুটি তার মায়ের অনুপস্থিতিতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা সিদ্ধান্ত নেন মুক্তিপণ না পেলে শিশুটিকে রূপসা নদীতে ফেলে দেবেন।
সূত্র মতে, আটক রুবেলের বিরুদ্ধে যশোরের অভয়নগর থানায় ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা রয়েছে। তিনি গত সাত থেকে আট বছর ঢাকায় গার্মেন্টসকর্মীর পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। রুবেল একাধিক বিয়ে করেন। আর তানিয়া আফরোজ একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। তিন বছর আগে পরিবারের অমতে রুবেলকে বিয়ে করেন তানিয়া। এরপর থেকে তার পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন:প্রযুক্তির নতুন যুগে বেনাপোল ইমিগ্রেশন