দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে গতি পেয়েছে ঝিনাইদহের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ধারক বাহক জেলাপরিষদ। জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, গোরস্তান, রাস্তাঘাট ইত্যাদিতেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। পরিষদের জেলা কার্যালয়সহ উপজেলা পর্যায়ের বাংলোগুলোও যেন সাজতে শুরু করেছে নতুন করে। শিক্ষার্থী, বিশেষ করে নারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বাইসাইকেল, বৃত্তি প্রদান, প্রতিবন্ধী, পিছিয়েপড়া নারিদের আত্মকর্মসংস্থান ও জীবনমান উন্নয়নে তাদের সেলাইমেশিন দানসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে এখন মুখর ঝিনাইদহে জেলা পরিষদ। দেখে মনে হয় উন্নয়নের পালে হাওয়া লেগে তা ভেসে চলেছে উজানের স্রোতে সব বাঁধাকে পেছেনে ফেলে।
ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের পাশ ঘেঁষে অবস্থিত ঝিনাইদহে জেলা পরিষদের প্রবেশমুখেই রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশালকায় নজরকাড়া প্রতিকৃতি। ভবনটিও পেয়েছে সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা। জেলার ৬ উপজেলাতেই জেলা পরিষদের বাংলোগুলোর আসবাব ও অন্যান্য কিছু পেয়েছে নতুনত্ব। হরিণাকুন্ডুর পরমথুরাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে নজর কেড়ে নিল নতুন গেট। সুদৃশ্য এ গেট জেলা পরিষদ বানিয়ে দিয়েছে কিছুদিন আগে। তবে, সীমানা প্রাচিরের কাজ চলমান।
প্রধানশিক্ষক লাবণী পারভিন ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বর্ষীয়ান সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, ১৯৯৫ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে গেট না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যখন-তখন পার্শবর্তী রাস্তায় চলে যেত কারণে -অকারণে। বহিরাগত ও স্থানীয় কিছু লোকও বিনা অনুমতিতে ঢুকে পড়তে বিদ্যালয়ের মাঠে, কখনও বা বারান্দায় এসে হাজির হত। শুধু তাই নয়, এলাকাবাসি স্কুলের সামনের স্থানকে রীতিমত রাস্তা বানিয়ে নিয়েছিল। ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ সুদৃশ্য গেট বানিয়ে দেয়ায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্মচারিরা এখন নিরাপদ। বহিরাগত ও স্থানীয় মানুষের অকারণ চলাফেরাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে।
একই উপজেলার কাপাসহাটিয়া মসজিদপাড়া জামে মসজিদে চোখ আটকে যায় সেটির সুরম্য প্রবেশপথে। কারুকার্য করা প্রবেশপথে সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে মসজিদটির। কয়েকজন মুসল্লি জানালেন, গেট না থাকায় এলাকার পথচারিদের গরু-ছাগল ইত্যাদি ঢুকে পড়তো মসজিদের ভেতরপ্রান্তে। এখন তা রোধ করা সম্ভব হয়েছে। মুসল্লিরা নিারপদে নামাজ আদায় করতে পারছেন। চোর-ছেচড়দের ভয়ও এখন নেই, জানালেন মুসল্লিরা। ঝিনাইদহ পৌর এলাকার পবহাটি বালুরচরের হরিসভা মন্দিরটি এখন সুসজ্জিত, সুরক্ষিত। ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ বানিয়ে দিয়েছে একটি সুবিশাল সভাস্থল। টাইলস দিয়ে মোড়ানো মন্দিরটি ভক্তদের মন কাড়ে, আকর্ষণ করে এলাকার ও দূরদূরান্তের দর্শণার্থী ও ভক্তদের, জানালেন এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ড. হারুণ আর রশিদ জানান, জেলার সবশ্রেণির মানুষকে সেবা দিতে তিনি প্রতিশ্রুত। সরকারের দেয়া যেকোন সুবিধা কাজে লাগিয়ে তিনি জেলাবাসির উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঝিনাইদহকে বাসযোগ্য একটি জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চান। এ জেলায় বসবাসকারিরা তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ব্যবসা, প্রযুক্তিগত সুবিধাসহ সবরকম সুযোগ সুবিধাসহ সব সুবিধা এলাকায় বসে “ওয়ানস্টপ সার্ভিস”-র মাধ্যমে পেতে পারেন সে কাজটিই তিনি যেকোন মূল্যে করতে পিছপা হবেন না।
হামদহ ঘোষপাড়ার একটি টিনের ঘরে শোনা গেল সেলাইমেসিন চালানোর শব্দ। কন্যাসন্তানের জননী মিতালি ঘোষ জানান- তার অভাবের কথা বিবেচনা করে জেলা পরিষদ থেকে একটি সেলাইমেসিন দেয়া হয়েছে কিছু রোজগারের জন্য। তিনি মেসিনটি দিয়ে এলাকার মেয়েদের জামাকাপড় বানিয়ে একদিকে যেমন কিছু আয় করে টি-স্টল চালানো স্বামীর সংসারের চাহিদা মেটাচ্ছেন, পরিবারের সবার জামাকাপড় বানাতে আর দর্জির কাছে যেতে হচ্ছে না। বাইসাইকেল চালিয়ে স্কুল-কলেজে যাচ্ছে ঝিনাইদহের বেশ ক’জন ছাত্রী। মনোহরি গোলাপি রঙের বাইকে চড়া যাদের পক্ষে সম্ভব ছিলনা, এখন রীতিমত সাইকেল হাকিয়ে চলেছে স্কুল-কলেজ, প্রাইভেটশিক্ষক আর শহরের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য। ওরা এখন মুক্ত, স্বাধীন।
ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজার সাথে কথা বললে তিনি জানান, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে তার পরিষদ যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। সরকারি অর্থে স্বচ্ছতার সাথে জেলার ৬ উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, গোরস্তান, রাস্তাঘাট ইত্যাদি নির্মাণ ও মেরামত করে আপামর জনসাধারনের কল্যাণে তারা নিরলস কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছেন।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ড. হারুণ আর রশিদ-র সাথে আলাপ করলে তিনি জানালেন, জেলার সবশ্রেণির মানুষকে সেবা দিতে তিনি প্রতিশ্রুত। সরকারের দেয়া যেকোন সুবিধা কাজে লাগিয়ে তিনি জেলাবাসির উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঝিনাইদহকে বাসযোগ্য একটি জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চান। এ জেলায় বসবাসকারিরা তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ব্যবসা, প্রযুক্তিগত সুবিধাসহ সবরকম সুযোগ সুবিধাসহ সব সুবিধা এলাকায় বসে “ওয়ানস্টপ সার্ভিস”-র মাধ্যমে পেতে পারেন সে কাজটিই তিনি যেকোন মূল্যে করতে পিছপা হবেন না, জানালেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ড. হারুণ আর রশিদ।