ঢাকা অফিস
সম্প্রতি বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নাশকতা করতে না পারে এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। যারা নাশকতা করবে তাদের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
আজ বুধবার ধানমন্ডির নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কলে যুক্ত হয়ে এমন নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। আজ ধানমন্ডিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যৌথসভা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠক শেষে তিনি দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন। পরে দলীয় সভাপতি উপস্থিত নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা বললে ওবায়দুল কাদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের মোবাইলে প্রধানমন্ত্রীকে ভিডিও কল দেওয়ার জন্য বলেন। তিনি ভিডিও কল দিলে সাত থেকে আট মিনিট নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা। ভিডিও কলে তিনি বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনিবাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, সাহাবুদ্দিন ফরাজি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান গণমাধ্যমকে জানান, ঈদের ছুটিতে জনসংযোগের পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের উপকারভোগীদের খোঁজখবর নিতে নেতা–কর্মীদের ভিডিও কলে নির্দেশনা প্রদান করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে থাকা একাধিক নেতা বলেন, দলীয় সভাপতি মূলত পাঁচ–ছয়টা নির্দেশনা দিয়েছেন। অনাবাদি জমি রাখা যাবে না। যার জমি আছে তাঁকে উৎপাদন বাড়াতে বলেছেন।
গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বিএনপির আমলের অপশাসন দুর্নীতি চিত্র এবং পার্থক্য মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য বলেন।
এমপিদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, এলাকায় কোনো গ্রুপিং দ্বন্দ্ব করা যাবে না। সবাইকে কাজ করতে হবে। মনোনয়ন দেব আমি। যারা এলাকায় কাজ করতে চায় একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব ও প্রতিযোগিতা করা যাবে না।
এ সময় কৃষকদের ধান কাটার সহযোগিতা করার পাশাপাশি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বলেন শেখ হাসিনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিষয়ে তিনি বলেন, যার যার এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্প আছে সেখানে গিয়ে মানুষের খোঁজ–খবর নেওয়ার জন্য তিনি বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি একটা লোককেও ঘরহীন, ভূমিহীন রাখব না। যদি কোনো এলাকায় কোনো ভূমিহীন থাকে খোঁজ নিবা, তাদের ঘর দেওয়া হবে।’
এ দিকে ধানমন্ডিতে থাকা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঙ্গে শেখ হাসিনা কথা বলেন বলে জানা গেছে। তিনি তাঁদের দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার নির্দেশনা দেন। ছাত্রলীগের দুই নেতা দলীয় সভাপতিকে জানান পূর্ণাঙ্গ কমিটি তাঁরা প্রস্তুত করেছেন। ঈদের দুই একদিন পরই কমিটি দেবেন বলেও জানান তাঁরা।
বাড়ি যাওয়ার সময় সতর্কভাবে চলাফেরা করা জন্য ছাত্রলীগ নেতাদের নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। বাইক চলানোর সময় যাতে সবাই সতর্ক থাকে সে কথা মনে করিয়ে দেন তিনি।
এ সময় দলীয় নেতাদের সাদাসিধে জীবনযাপনের পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সাদাসিধে জীবন যাপন করতে হবে। মানুষের সঙ্গে মিশে থাকতে হবে, তাঁদের কথা চিন্তা করতে হবে।