নিজস্ব প্রতিবেদক
আজীবন সংগ্রামী রাজনীতিক, যশোর জেলা জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অশোক কুমার রায় আর নেই। তাঁর প্রস্থান যেন এক শূন্যতা তৈরি করল যশোরের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। শুক্রবার রাত প্রায় ১২টার দিকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই আদর্শের পথে অবিচল থাকা অশোক কুমার রায় ছিলেন একজন নির্ভীক সংগঠক ও মানবিক রাজনীতির প্রতীক। রাজনীতির পাশাপাশি সমাজ ও সংস্কৃতির নানা কর্মকাণ্ডে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ তাঁকে করে তুলেছিল সর্বজনপ্রিয়। শহরের লালদীঘি পাড়ায় অবস্থিত পূবালী প্রিন্টিং প্রেসের সত্ত্বাধিকারী হিসেবেও তিনি ছিলেন পরিচিত ও সম্মানিত।
ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন অসাধারণ বিনয়ী, সদালাপী ও আন্তরিক। মতের ভিন্নতা থাকলেও মানুষ হিসেবে সবার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলার যে গুণ, তা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল। অনেকের কাছেই তিনি ছিলেন অভিভাবকতুল্য, অনুপ্রেরণার এক জীবন্ত উৎস।
তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই গভীর শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে যশোর। জেলা জাসদের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে যান বেজপাড়ার বাসভবনে। শোক, ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতায় ভিজে ওঠে পরিবেশ।
শনিবার বেলা ১১টায় তাঁর মরদেহ নিজ বাসভবনের সামনে সর্বসাধারণের শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়। পরে সুধীর বাবুর কাঠগোলার সামনে গার্ড অব অনার প্রদান শেষে নীলগঞ্জ মহাশ্মশানে সম্পন্ন হবে এই সংগ্রামী মানুষের শেষকৃত্য।
অশোক কুমার রায়ের প্রস্থান শুধু একটি মৃত্যুই নয়—এটি একটি আদর্শ, একটি মানবিক রাজনীতির অধ্যায়ের অবসান। তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর কর্মে, তাঁর সততায়, আর মানুষের হৃদয়ের গভীর ভালোবাসায়।
