মৌমাছি স্কুলে শিক্ষার্থীদের তিনদিনের কর্মশালা
নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর শহরের খড়কিতে অবস্থিত মৌমাছি স্কুলের প্রাথমিক শাখায় গত ৯ থেকে ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘আমার টিফিন আমি বানাই’ শীর্ষক এক কর্মশালা। আজ মঙ্গলবার এ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিশুদের আত্মনির্ভর করে তোলা, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও আধুনিক জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাস্তব দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যেই আয়োজনটি করে মৌমাছি স্কুল কর্তৃপক্ষ। কর্মশালায় প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৮৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
রান্নার জন্য অভিজ্ঞ ইয়াসমিন সুলতানা শিশুদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেন। তিনি শিশুদের তিন দিনব্যাপী শেখান টিফিন তৈরির সহজ ও স্বাস্থ্যকর উপায়। তার তত্ত্বাবধানে শিশুরা শেখে মোট ৮টি আকর্ষণীয় ও পুষ্টিকর মেনু- ভেজিটেবল উপমা, ভেজিটেবল প্যানকেক, ফুট স্টিক, সবজি নুডুলস, রেইনবো সালাদ, বয়েল্ড এগ সালাদ, স্যান্ডউইচ এবং এগ বেকড মাফিন।
ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা দলীয়ভাবে প্রতিটি পদ প্রস্তুত করে। এতে তারা শেখে সহযোগিতা, শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধের চর্চা। রান্না শেষে শিশুরা নিজের হাতে তৈরি খাবার নিজেরাই স্বাদ গ্রহণ করে এবং সেই আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয় সহপাঠীদের সঙ্গে। প্রতিটি ধাপে তাদের শেখানো হয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার পদ্ধতি ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব। তৃতীয় দিনে অনুষ্ঠিত দিকনির্দেশনামূলক সেশন-এ অংশ নেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
এখানে আলোচনা হয় কীভাবে শিশুরা বাসায় নিজের টিফিন নিজেরাই তৈরি করতে পারে এবং এমন উদ্যোগ তাদের আত্মবিশ্বাস ও সৃজনশীলতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
অভিভাবক রূপমা বড়ুয়া বলেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ। আমি যেখানে বাসায় আমার কন্যাকে ছুরি-কাচি ধরতে দিই না। যেখানে আমার সন্তান রান্না শিখেছে এবং বাসায় সেটা রান্নার চর্চা করছে এটা অনেক ভালো লাগার বিষয়।
কর্মশালা শেষে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করে জানায় শিশু তাহমিদ ফয়েজ ও তাইবা। তারা জানায়, নিজের হাতে টিফিন তৈরি করা তাদের জন্য ছিল আনন্দ ও গর্বের বিষয়। তারা ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন রেসিপি শিখে পরিবারের জন্য সহযোগিতা করতে চায়।
মৌমাছি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাগর বিশ্বাস বলেন, “শিক্ষা শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়-জীবনযাপনের দক্ষতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা আত্মনির্ভর, আত্মবিশ্বাসী ও বাস্তবমুখী হয়ে গড়ে উঠুক।”
অভিভাবক ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা মৌমাছি স্কুলের এ ধরনের বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
