র্যাব পুলিশ আনসার বিজিবি ছাড়াও থাকছে স্ট্রাইকিং ফোর্স
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করলে কঠোর শাস্তি
সুনীল ঘোষ: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যেকোন বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে যশোর জেলা প্রশাসন। চার স্তরের নিছিন্দ্র নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলা হয়েছে নির্বাচনী এলাকায়। ভোটে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করলে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারী দিয়েছেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম (ডিএসবি)। একই সাথে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্বাচনী এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দৈনিক কল্যাণকে তিনি জানান, যশোর সদরের ১৫টি ইউনিয়নে ২০৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এসব কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১ হাজার ৮৮৭ জন পুলিশের পাশাপাশি ৩ হাজার ৬৫০ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর বাইরে ৭১টি মোবাইল টিম ও ১১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে থাকবে। নির্বাচনী এলাকায় ৮টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নির্বাচনে ১০৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় থাকবে ৯৪৮ জন পুলিশ ও ১ হাজার ৭৬৮ জন আনসার সদস্য। এছাড়া ৩৩টি মোবাইল টিম ও ১১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। ১১টি ইউনিয়ন এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে ৬টি।
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বাদল কুমার অধিকারী দৈনিক কল্যাণকে জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। সেকারণে কোথায় কি ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে তা পুলিশ বিভাগই বলতে পারবে। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ শব্দটি ব্যবহার করি না। সাধারণ, গুরুত্বপূর্ণ ও অতিগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। এবার পুলিশ বিভাগ কোনো তালিকা দেয়নি। বিষয়টি জানতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার হুমায়ুন কবীর জানান, এই নির্বাচনে জাল ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। ভোটের সকালে কেন্দ্রে পাঠানো হবে ব্যালট পেপার। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। তিনি আরও বলেন, যশোরের ১৫টি ইউনিয়নে মোট ভোটার চার লাখ ২১ হাজার ৭৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ১২ হাজার ৭৫৮ ও মহিলা দুই লাখ আট হাজার ৯৭২ জন। এছাড়া একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।
যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুটি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রায় ৩ হাজার পুলিশের ৫ হাজার ৪১৮ জন আনাসর সদস্য নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে। এছাড়া ২২ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ প্লাটুন বিজিবি, ২ প্লাটুন র্যাব সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। সোমবার বিকেলে যশোর জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে রোববার সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সেখানে যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান ও পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার সাফ জানিয়ে দেন, কোন রকমের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। এক্ষেত্রে কার কি পরিচয় তা বিবেচনা করা হবে না। অপরাধীকে শাস্তি পেতে হবে।
উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করতে যশোর জেলা প্রশাসনের রয়েছে নানা প্রস্তুতি। কিন্তু তা সত্ত্বেও নির্বিঘেœ ভোটাধিকার প্রয়োগ করা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা রয়েছে। যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া, ফতেপুর, চুড়ামনকাটি, দেয়াড়া, আরবপুর, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলোর বোদ্ধা ও প্রবীণ ভোটাররা। যদিও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এধরণের কোন তথ্য জানানো হয়নি।