কল্যাণ ডেস্ক
পছন্দের নেতার নাম নেই ব্যানারে। সভায় নিজেও পাননি দাওয়াত। এতে ক্ষোভে অনুষ্ঠানের ব্যানারই খুলে নিয়ে গেছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন রিটন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী। বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের এক আলোচনায় সভায় এ ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাতে সান্তাহার পৌর শহরের বশিপুর কালিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভা শুরুর আগে ব্যানার খুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ব্যানার ছাড়াই সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটকেন্দ্র কমিটি গঠনে আলোচনা সভার আয়োজন করে সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ড শাখা। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই সভায় উপস্থিত হন আব্দুল্লাহ আল মামুন রিটন। এ সময় তিনি দেখতে পান স্টেজের পেছনে টাঙানো ব্যানারে অতিথিদের নামের সারিতে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সান্তাহার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মন্টুর নাম অনুপস্থিত। এই নাম না থাকায় ক্ষোভে আশরাফুলের অনুসারী উপজেলা ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল মামুন রিটন ও তার সহযোগী সেই ব্যানারটি খুলে নিয়ে চলে যান। এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন স্থানীয় নেতারা। পরে তারা ব্যানার ছাড়াই সভা শেষ করেন।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-এলাহী কাজল, সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাহিদুর বারী। সভায় সভাপতিত্ব করেন ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু সরকার এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক তাপস সরকার।
সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক তাপস সরকার বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম মন্টুর নাম না দেওয়ার কারণে ছাত্রলীগ কর্মী রিটন ব্যানারটি খুলে নিয়ে যান। বিষয়টি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় তারাই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
বিষয়টি জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিটন বলেন, দলের সব কাজে আমরা থাকি। অথচ আমার নিজ এলাকায় সভা হচ্ছে আমাদের একটি কথাও বলা হয়নি। কেন বলা হয়নি? বিষয়টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে জানতে চাইলে তারা সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারে না। পরে আমরা ব্যানারটি খুলে নিয়ে আসি।
জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশরাফুল ইসলাম মন্টু বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্র কমিটি করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান রাজুর নাম ব্যানারে প্রধান অতিথি ঠিকই লেখা হয়। অথচ আমার নাম লেখা হয় না। তাতে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। আমার নাম না রাখার জন্য ব্যানার খোলার ঘটনা ঘটেছে- এটা সঠিক নয়। সভায় রিটনকে বলা হয়নি এজন্য হয়তো অভিমানে সে এমন কিছু করতে পারে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মাহিদুল ইসলাম জয় বলেন, এক জায়গায় যদি আওয়ামী লীগ নেতার নাম না থাকে অথবা তার অনুসারী কেউ যদি সেটা (ব্যানার) খুলে তাহলে সেটা স্থানীয় নেতারা বসে সমাধান করবে। যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে।
সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাহিদুর বারী বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। তবে সভা নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা ব্যানার ছাড়াই সভা করেছি। সৃষ্ট সমস্যা পরে একটি ঘরোয়া বৈঠকের মাধমে সমাধান করা হয়েছে।
এ ঘটনাকে একটা ভুলবুঝাবুঝি হিসেবে মন্তব্য করেছেন আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ওই ছাত্রলীগের কর্মীসহ অন্যদের মাঝে একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছিল। পরে আমরা বিষয়টি কথা বলে ঠিক করে নিয়েছি।
