রায়হান সিদ্দিক
লাল সবুজের পতাকায় মাঠ ছেয়ে আছে। হাতে হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে অগণিত মানুষের ভিড়। সুসজ্জিত ব্যান্ডদলের বিগ ড্রামসহ অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের হৃদয় উদ্বেল করা বাজনায় মুখর হচ্ছে চারপাশ। ভেতর ভেতরে সবাই গুনছে অনন্য এক প্রতীক্ষার প্রহর। তখন বিকলে ৩ টা ৪৫ মিনিট। শেষ হয় অপেক্ষার পালা। জাতীয় সংসদদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে দেশবাসীকে নিয়ে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শপথ পাঠ।
বঙ্গবন্ধু কন্যার সাথে কোটি কোটি মানুষের দীপ্ত কন্ঠে উচ্চারিত হয় দেশ গড়ার শপথ বাণী। তার সাথে কোটি কোটি কন্ঠে অনুুরণিত হয়, ‘শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’। রক্তার্জিত সবুজ লালের পতাকা হাতে দেশপ্রেম জাগানো এমন শপথ পাঠ সৃষ্টি করে অনন্য এক মাইলফলক। শপথবাক্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানী শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা।
যশোরে বিজয়ের ৫০ বছরের এই শপথ ঘিরে গত বৃহস্পতিবার উৎসব মুখর ছিল পুরো যশোর। শহরের মুন্শি মেহেরউল্লাহ ময়দানে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহীনী, আনসার ভিডিপ্নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ শপথ নেন। প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে শপথ পাঠ করেন তারা।
শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে সজ্জিত করা হয় মুন্শি মেহেরুল্লাহ ময়দান। মাঠের চারপাশ পতাকা দিয়ে সাজানো হয়। রওশন আলী মঞ্চের সামনে পাতা হয় গাঢ় লাল রঙের গালিচা। সুসজ্জিত বাদ্যদলের যন্ত্রধ্বণি ময়দান জুড়ে দেশাতœবোধক সুর ভরিয়ে দেয়। বিজয় উৎসবের মেজাজে থাকা মানুষজন রঙবেরঙের পোশাক পরে শপথ পাঠে যোগ দেন। সব মিলিয়ে ঐতিহাসিক এই মাঠটি উৎসব রঙিন হয়ে ওঠে।