আসাদুজ্জামান মিলন, শরণখোলা থেকে: পতিত জমিতে পরীক্ষামূলক গম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদী সংলগ্ন ঝিলবুনিয়া গ্রামের চাষি জয়নাল আবেদীন আকন। এ বছর ২ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক গম চাষ করতে জমির চাষ, বীজ ও সার বাবদ তার ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার টাকা। ২ বিঘা জমিতে ৫০ মণেরও বেশি গম উৎপাদন হয়েছে তার। উৎপাদিত প্রতি মণ গম বাজারে ১২’শ টাকা দরে বিক্রি করে তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে বলে জানান তিনি। ভবিষ্যতে আরো বেশি জমিতে গম চাষ করে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখতে চান তিনি।
জয়নাল আবেদীন আকন পেশায় একজন মুদি দোকানি। পাশের উত্তর কদমতলা গ্রামের কার্পেটিং রোডের পাশে একটি ছোট দোকানে দিন রাত কর্মব্যস্ত থাকেন তিনি। এর সাথে প্রতি আবাদ মৌসুমে সামান্য কিছু জমিতে চাষ করেন। কখনও উফশী বোরো, কখন ও সূর্যমূখী আবার কখনও বা বাঙ্গি চাষ করতেন। এসব চাষে এতদিন খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে এবার অবসরপ্রাপ্ত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের কাছে ছুটে যান। তার পরামর্শে গম চাষের উদ্যোগ নেন।
বলেশ্বর নদী সংলগ্ন ঝিলবুনিয়া গ্রামের দুই বিঘা পতিত জমিতে গম চাষ করেন তিনি। এতে তার সব মিলিয়ে ২৪ হাজার টাকা খরচ হয়। কম সময়ে কম পরিশ্রমে দুই বিঘা জমিতে গমের বাম্পার ফলন পেয়েছেন তিনি। ৫০ মণের ও বেশি গম ঘরে তোলার আগেই প্রতি মন গম ১২’শ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছেন। আগামীতে তিনি আরো বেশি পরিমান জমিতে গম চাষ করবেন বলে জানান। তিনি শরণখোলা উপজেলার পতিত থাকা হাজার হাজার বিঘা জমিতে গম চাষের জন্য অন্যান্য চাষিদের আহবান জানিয়ে বলেন, গম চাষে কম সময়ে, কম পরিশ্রমে কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। এতে নিজেদের লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ও ভূমিকা রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে অবসরপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, কম পরিশ্রমে ও কম খরচে ভালো ফলনের জন্য তাকে গম চাষের পরামর্শ দিয়েছি। পরীক্ষামূলক চাষে সে ভালো ফলন পেয়েছে। এ উপজেলায় এক ফসল উৎপাদনের পর বছরের অধিকাংশ সময় পতিত থাকা শত শত একর জমিতে গম চাষের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। এ ক্ষেত্রে চাষি জয়নাল আবেদীন আকন অনুকরণীয় হতে পারেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ওয়াসিম উদ্দিন বলেন, শরণখোলায় গম চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। গম চাষের সবচেয়ে সুবিধাজনক দিক হলো এতে খুব একটা পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। তাই চাষের খরচ সাশ্রয় হয়। তবে গম চাষের জন্য উপযুক্ত সময় বেছে নিতে হবে। শরণখোলায় যে কোন চাষের ব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেছেন।