নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বপ্নের পদ্মাসেতু দিয়ে দ্রুতই বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল করবে। কিন্তু সুবিধা বঞ্চিত হতে যাচ্ছে যশোরবাসী। বর্তমানে যশোর স্টেশন হয়ে তিনটি ট্রেন ঢাকায় গেলেও পদ্মাসেতু রেলপ্রকল্পের মাধ্যমে যশোরের জন্য মাত্র একটি ট্রেন রাখা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ যশোরবাসী আন্দোলন শুরু করেছেন। সর্বশেষ সোমবার ৩ জুন সংবাদ সম্মেলন করেছে জনউদ্যোগ যশোর নামে একটি সংগঠন। তারা ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন।
দাবিগুলো হলো বেনাপোল-যশোর-ঢাকা রুটে ২টা ট্রেন চালু করা। দর্শনা-যশোর-ঢাকা রুটে ২টা এবং খুলনা থেকে যমুনা সেতু হয়ে ঢাকা রুটের ট্রেনটা বহাল রাখতে হবে। ট্রেনের সময়সূচি এমন করতে হবে যাতে যশোর থেকে ঢাকা প্রতিদিন অফিস করা যায়। আর আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ (সাধারণ) বগি, কৃষিপণ্য, সবজি, ফুল-ফল ও মাছ বহনের জন্য মালবাহী বগি যুক্ত করতে হবে। এছাড়া টিকিট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিবন্ধনের বাইরে ব্যবস্থা রাখতে হবে। একই সাথে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা চালু করা।
জনউদ্যোগ সদস্য ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র যশোর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান মজনু লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয়, আগামি জুলাই মাসে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-খুলনা নতুন রুটে বাণিজ্যিক ভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। সুন্দরবন, চিত্রা ও বেনাপোল এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করে পদ্মবিলা হয়ে ঢাকাতে যাবে। ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া-দর্শনা রুটে কোনো ট্রেন থাকবে না। তাই এ নতুন রুটে শ্যাটেল ট্রেন চালানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
আর দক্ষিণ বঙ্গের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা যশোর শহরের স্টেশন থেকে সবচেয়ে বেশি যাত্রী হলেও থাকছে না কোনো নতুন ট্রেন। খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস আগের মতো যশোর শহরের স্টেশনে না এসে শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরের নতুন তৈরিকৃত পদ্মবিলা স্টেশন হয়ে ঢাকা যাবে। এতে করে চিত্রা এক্সপ্রেস ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস যাত্রী সংখ্যা কমবে। যশোর শহরের মানুষ কোনো মতেই ট্রেনে উঠতে অতদূর যাবে না। সেক্ষেত্রে বাড়তি ঝামেলা এড়াতে বাসে করেই রাজধানীতে যেতে বাধ্য হবে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের খাদ্য ভান্ডার বলা হয় যশোরকে। সড়কপথের তুলনায় রেলপথে যাতায়াতে অর্থ সাশ্রয়, নিরাপদ এবং পণ্য পরিবহনেও সুবিধা। খুলনা বিভাগীয় শহর হওয়ার কারণে যশোর অঞ্চল থেকে অনেক লোক জীবিকার তাগিদে এবং অন্যান্য কাজে যাওয়া আসা করতে বাধ্য হয়। এলাকার মানুষের সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ যাতায়াতের জন্য একটি কমিউটার ট্রেন চালু করা যশোরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। এই দাবি বাস্তবায়িত হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে এবং অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
জনউদ্যোগ যশোরের আহ্বায়ক প্রকৌশলী নাজির আহমদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জনউদ্যোগ সদস্য ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র যশোর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান মজনু। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবীন সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ, সিপিবি যশোর জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, জনউদ্যোগের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক সুরাইয়া শরীফ, অ্যাডভোকেট সৈয়দা মাসুমা বেগম, প্রেস ক্লাব যশোরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বৃহত্তর যশোর রেলসংযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান মিলন, আইইডি যশোর কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বীথিকা সরকার, জনউদ্যোগ যশোরের সদস্য সচিব কিশোর কুমার কাজল।