নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সড়কপথে রাজধানী থেকে যশোরের দূরত্ব নামিয়েছে মাত্র সাড়ে ৩ ঘণ্টায়। ট্রেনে তা আরও কমবে। রেললিংক প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষে। চলতি বছর জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগে এপ্রিলের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সেনাপ্রধান সকালে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা থেকে নড়াইল পৌঁছান। এরপর পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প (পিবিআরএলপি) কর্তৃক নির্মিতব্য নড়াইল রেলওয়ে স্টেশনের কাজের অগ্রগতি এবং বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
এসময় কাজের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে সেনাপ্রধান বলেন, দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী অংশগ্রহণ করে কাজের গুণগত মান বজায় রেখে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই কাজ সম্পন্ন করছেন। জনকল্যাণে সেনাবাহিনী সবসময় কাজ করে যাবেন। পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পের দ্বিতীয় অংশের (ভাঙা-যশোর) কাজ চলতি বছর জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগে এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
এদিন দুপুরে নড়াইলের লোহাগড়ার মল্লিকপুর ইউনিয়ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবনির্মিত অধ্যাপক শেখ মো. রোকন উদ্দিন আহমেদ মাল্টিপারপাস হল উদ্বোধনের পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
জন্ম, বেড়ে উঠা ও পড়ালেখা খুলনায়, কর্মজীবনে দেশ বিদেশে ছুটে চললেও নাড়ীর টানে নড়াইলের লোহাগড়ার নিভৃত পল্লী করফার পৈত্রিক ভিটায় বার বার ছুটে আসেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যবদলে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করে যেতে চান তিনি।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য কালে সেনাপ্রধান বাল্যকালের স্মৃতিচারণ করেন, অনেক অজানা গল্পের সাক্ষী হয় নড়াইলবাসী।
সেনাপ্রধান যুগোপযোগী বাহিনী গড়তে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতাকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়ে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেন জাতির জনকসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা শহীদদের। মানুষের জন্য কিছু করতে পারাটা পরম সৌভাগ্যের, সুযোগ পেলে সেটা নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে করার পাশাপাশি অবসরে গেলে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে যেতে চান বলে জানান তিনি।
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে নড়াইলের দুটি আসন থেকেই নির্বাচিত হয়েছেন। তাই নড়াইলের প্রতি আন্তরিকতা থেকেই নড়াইলের উন্নয়নে যা চাওয়া হয় তা দিয়ে দেন। শুধু ভাল ফলাফলই নয়, সুশিক্ষা লাভ করে আদর্শ চরিত্র গঠন করে দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে শিক্ষার্থীদের।
পরে তিনি ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন কর্তৃক রোড প্রশস্তকরণসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প পরিদর্শনপূর্বক প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেন।
পরে মধুমতি আর্মি ক্যাম্পে স্থানীয় গরীব ও দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ শেষে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলাধীন করফায় ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সম্মুখে নিজের দান করা জমিতে স্থাপিত ‘আল হুদা মসজিদ’ উদ্বোধন করেন।
এসময় জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ৫৫ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার যশোর এরিয়া, সেনাসদরের চীফ কনসালটেন্ট জেনারেল, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের চীফ কোঅর্ডিনেটর, নড়াইলের জেলা প্রশাসক ছাড়াও ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।