আটক দুই আসামির আদালতে জবানবন্দি
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পরকীয়ার বলি হয়েছেন মণিরামপুরের কলেজছাত্র একরামুল ইসলাম। আটক তিনজনের দুইজন শুক্রবার যশোর আদালতে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসান জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তিনজনকেই জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।
আটককৃতরা হলো, মণিরামপুরের ভরতপুর গ্রামের হোসেন আলী মোড়লের দুই ছেলে আমিনুর রহমান ও কামরুল ইসলাম এবং একই গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মেহেদী হাসান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র এসআই সৈয়দ রবিউল ইসলাম পলাশ জানিয়েছেন, একই গ্রামের কামরুল ইসলাম মালয়েশিয়ার প্রবাসী। বাড়িতে দুই সন্তানসহ স্ত্রী হীরা খাতুন বসবাস করতেন। একই গ্রামের কলেজছাত্র ইকরামুল ইসলামের সাথে তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি কয়েকমাস আগে বাড়িতে আসার পরে জানতে পারেন কামরুল ইসলাম। ওই সময় স্ত্রীর পরকীয়ার ঘটনায় ভাই আমিনুর রহমানকে জানান কামরুল ইসলাম। এরপরে আবারো কামরুল বিদেশে চলে যান। তার ভাই আমিনুর রহমান তার ভাবির সাথে পরকীয়া সম্পর্ক ছিন্নের জন্য বলেন একরামুলকে। এতে ইকরামুল বিভিন্ন হুমকি দেয় আমিনুরকে। এর জের ধরে আমিনুর তাকে খুন করার জন্য পরিকল্পনা করে। আমিনুর তাকে খুন করতে মেহেদী হাসানের সহযোগিতা চায়। ২৮ মার্চ সন্ধ্যার পরে মশ্মিমনগর-নোয়ালি রাস্তার কাড়াখালি ব্রিজের উপর বসে গাঁজা সেবন করছিলেন ইকরামুল। গাঁজা সেবন করতে দেখে মেহেদী হাসান এসে আমিনুরকে জানায়। আমিনুর বাড়ি থেকে কয়েক হাত বৈদ্যুতিক এনে পিছন দিক থেকে ইকরামুলের গলায় ফাঁস লাগিয়ে দেয়। এসময় ইকরামুলের মোবাইল ফোনসেটটিও কেড়ে নেয়। বৈদ্যুতিক তার দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানোর কারণে ইকরামুল নিস্তেজ হয়ে পড়েন । এক পর্যায় ঘটনাস্থলে তিনি মারা যায়। সাথে সাথে লাশটি গুম করতে ভাই কামরুল ইসলামকে জানায় আমিনুর। কামরুল ইসলাম এই হত্যার কথা শুনেই আমিনুরকে মারপিট করে। পরে লাশটি গোপন করতে আমিনুর, কামরুল ও মেহেদী হাসান একত্রে কাজ করেন।
এদিকে ওইদিন রাতে ইকরামুল বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্নস্থানে খোঁজ খবর নিয়ে ৩০ মার্চ মণিরামপুর থানায় জিডি করা হয়। আর ওই জিডির কপি যশোর পিবিআই অফিসে দিয়ে ইকরামুলকে উদ্ধারের ব্যাপারে সহযোগিতা চায় পরিবার। পিবিআই’র এসআই সৈয়দ রবিউল ইসলাম ৩১ মার্চ সকালে বাড়ি থেকে আমিনুরকে আটক করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভাই কামরুল এবং মেহেদীকে আটক করা হয়। গতকাল শুক্রবার আটক তিনজনকেই আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।