আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দু-একটি পাখি নয়, হাজার হাজার কিংবা লাখ লাখ পাখি ঘিরে ধরেছিল বিমানটিকে। বিমানটিকে তারা উড়তেই দিচ্ছিল না। পাইলট জেসন যতই চেষ্টা করছিলেন বিমানটিকে ওপরে নিয়ে যেতে, পাখিগুলোও যেন ততই আগ্রাসী হয়ে উঠছিল। কিন্তু এ অবস্থা চলতে থাকলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এত যাত্রীর প্রাণ রক্ষায় দায়িত্ব যে জেসনের হাতে! তাই তিনি যোগাযোগ করলেন বিমানের কন্ট্রোল রুমে। তারা দ্রুত প্লেনটিকে এয়ারস্ট্রিপে নামিয়ে আনার তাগিদ দিলেও সেটি করাও কঠিন হয়ে পড়েছিল।
কেউ বুঝতে পারছিলেন না কী ঘটছে। কেন হঠাৎ এভাবে এত পাখি প্লেনের ওপর হামলে পড়ল? যেকোনো সময় বিমানটি ক্র্যাশ করতে পারে এ অবস্থায়। ভেতরে যাত্রীরাও আতঙ্কে অস্থির। তাদের চিৎকারে কান পাতা দায়। বাধ্য হয়ে জেসন কাছেই পানিতে নামিয়ে দিলেন বিমানটিকে। এরপর অল্প অল্প করে যাত্রীরা বের হয়ে আসতে লাগলেন। ছোট ছোট ট্রলারে তাদের নেয়ার ব্যবস্থা করা হলো। কিন্তু পাখিগুলোর আক্রোশ যেন মিটছেই না। তারা পানিতে সেই যাত্রীদের ওপরও আক্রমণ করতে শুরু করল। সে এক অদ্ভুত আতঙ্কের সময়!
ব্যাগেজ কম্পার্টমেন্টের কাছে বারবার ঘুরে ঘুরে ঠোকর দিতে লাগল। বিমান কর্তৃপক্ষ হতবিহ্বল হয়ে পড়ল। তারা নিশ্চিত হলো, কোথাও কোনো গণ্ডগোল আছে। এরপর যখন লাগেজ বের করার সময় হলো, লাগেজ কম্পার্টমেন্ট থেকে অদ্ভুত এক শব্দ পেলেন তারা। কাছে গিয়ে একটি লাগেজ চিহ্নিত করা হলো। লাগেজটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল সেখানে রয়েছে অসংখ্য বিদেশি পাখি। পাখিগুলো পাচারের চেষ্টা করছিলেন সেই বিমানেরই এক যাত্রী। জাল পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এ কাজ করছিলেন। হাতেনাতে ধরে তার শাস্তির ব্যবস্থা করল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, বন্দি পাখিগুলোর চিৎকার কেমন করে যেন পৌঁছে গিয়েছিল তাদের স্বগোত্রের কাছে। তাই তো একতাবদ্ধ হয়ে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, নিষ্ঠুর মানুষের করাল গ্রাস থেকে বাঁচাতে ক্ষুদ্র প্রাণীগুলোর এই ভীষণ তীব্র আন্দোলন।
সূত্র এনডিটিভি