নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের ভবদহ জলাবদ্ধ এলাকার পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য ভবদহ স্লুইস গেটের সবগুলো কপাট খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতারা। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের নীলরতন ধর সড়কে সংগঠনটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল। এ সময় সংগঠনটির উপদেষ্টা ইকবাল কবীর জাহিদসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ‘যশোরে এবার গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বৃষ্টিপাত হলেও জলাবদ্ধতার মাত্রা অনেক কম। ভবদহ স্লুইস গেটের আটটি কপাট খুলে দেয়ায় পানি দ্রুত নামছে, ফলে জলাবদ্ধতা তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। যদি ২১ ভেন্টের এই গেটের বাকি কপাটগুলোও খুলে দেয়া হয়, তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত দেড় শতাধিক গ্রামের পানি নিষ্কাশিত হয়ে যাবে।’
তিনি আরও দাবি জানান, দ্রুত আমডাঙ্গা খাল সংস্কার, সরকার প্রতিশ্রুত ৮১ কিলোমিটার নদী খননের কাজ শুরু করা এবং টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) বা জোয়ারাধার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১২ সাল থেকে সকল গেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্ব তৎকালীন সরকারের প্রতিমন্ত্রীসহ স্বার্থবাদী মহলের ষড়যন্ত্রে বারোআউড়িয়া মোহনা পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার নদী হত্যা করা হয়। সরকারি অর্থ লুটপাটর স্বর্গরাজ্য তৈরি করে এবং সমগ্র এলাকা স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে। ইতিপূর্বেও স্লুইচ গেট বন্ধ করে উদ্ভূত অনুরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্যে সংশ্লিষ্টদের বিচার করা উচিৎ। এছাড়া আমডাঙা খালের টেন্ডার হলেও জমি অধিগ্রহণ নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে খাল সংস্কারের কাজ শুরু করতে পারেনি। জরুরি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করে খাল সংস্কার করা গেলে জলাবদ্ধতা নিরসণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
অন্যদিকে, ৮১ কিলোমিটার নদী খননের কাজ শুরু করা হয়নি। এ মাসের মধ্যে কাজ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। টিআরএম বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল এবং ঘের সংক্রান্ত নীতিমালা কার্যকর করার জন্য আপনার নির্দেশনা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা কার্যকরী করছেন না। জলবদ্ধতা স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে এটি আর একটি বড় কারণ। এই নীতিমালা লংঘন হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, আরো উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা তসলিম-উর-রহমান, সদস্য নাজিম উদ্দিন,শিবপদ বিশ্বাস, শেখর বিশ্বাস, অনিল বিশ্বাস, সাধন বিশ্বাস, রাজু আহম্মেদ,আলমগীর হোসেন, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস প্রমুখ ।