নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের অভয়নগরে পাষণ্ড স্বামীর নির্যাতনে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন তাকিয়া তুন সিদ্দিকা নামে এক গৃহবধূ। ১০ লাখ টাকা যৌতুক দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে মারপিট করে দু’টি চোখ অন্ধ এবং কোমরে ব্যাথা নিয়ে এখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগী তাকিয়া তুন সিদ্দিকা উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের তারেক সিদ্দিকীর মেয়ে এবং একই এলাকার মেহেদী হাসান বাবুর স্ত্রী।
এই ঘটনার মামলায় তার স্বামী বাবু গ্রেফতার হলেও অপর আসামি বাবুর মা মাহফুজা আক্তার রিক্তাকে এখনও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।
ভুক্তভোগী তাকিয়া তুন সিদ্দিকা জানিয়েছেন, ২০০৫ সালের ২ সেপ্টেম্বরএক লাখ এক টাকা দেনমোহর ধার্যে পারিবারিক ভাবে বাবুর সাথে তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে ইফতেখার আহম্মদ (১৩) ও আশনিমুল হাসান আবীদ (৬) নামে দুইটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে তার শাশুগিড়র কু-পরামর্শে স্বামী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। শুধু তাই নয় পাষ- স্বামী মারপিটের পর দু’টি চোখ উপড়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করেন বাবু। এছাড়াও তাকিয়া তুন সিদ্দিকার কোমরে আঘাত করে এখন মৃত্যু শয্যায় রয়েছেন। বাধ্য হয়ে তাকিয়ার পিতা বিভিন্ন সময় ১০ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে বাবুকে দিয়েছেন। এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে গত ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে মারপিট করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ২০ এপ্রিল তার বড় বোনি তাহমিনা নূর সিদ্দিকা এসে বাবুর বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এই ঘটনায় ২৮ এপ্রিল তাকিয়া তুন সিদ্দিকা বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওইদিনই প্রধান আসামি বাবুকে তার বাড়ি থেকে আটক করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভয়নগর থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু বাবুর মা এই ঘটনার পরিকল্পনাকারী বা সহযোগি আসামি মাহফুজা আক্তার রিক্তাকে এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ। বর্তমানে তাকিয়া তুন সিদ্দিকা জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তবে মামলার
তদন্ত কর্মকর্তা অভয়নগর থানার ওসি আকিকুল ইসলাম বলেছেন, প্রধান আসামি বাবুকে আটকের পর থেকে তার মা মাহফুজা আক্তার রিক্তা এলাকা ছাড়া রয়েছেন। তারপরও তাকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।