নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ৩২ মামলার আসামি রমজান আলী হত্যার প্রধান অভিযুক্ত রেলগেট এলাকার ত্রাস পিচ্চি রাজাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৪ রাউন্ড গুলি, তিনটি চাইনিজ কুড়াল, একটি চাকু ও একটি দা উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১১ মার্চ যশোরের পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার পিচ্চি রাজা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এলাকায় মাদক ও অস্ত্র বিকিকিনি এবং আধিপত্য বিস্তারে বিরোধকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, রেলগেট কলাবাগান এলাকার মজিবর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীরের ছেলে রাজা ওরফে পিচ্চি রাজা (২৫), বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার কানা বাবুর ছেলে সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন (২৮), চোরমারা দিঘিরপাড় এলাকার শাহ আলম মৃধার ছেলে শাওন ওরফে পটকে শাওন (২২), খড়কির আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ইবাদুল হোসেন (২৫) ও রেলগেট কলাবাগান এলাকার কানা বাসারের ছেলে তুহিন (২৮)।
র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানিয়েছেন, শহরের রেলগেট কলাবাগানের মাদক দম্পতি রেখা-ফায়েকের ছেলে রমজান আলী ও সাগর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, মাদক ও অস্ত্র কারবারি। দীর্ঘদিন ধরে রেলগেট পশ্চিমপাড়া, খড়কি, কলাবাগানসহ বিভিন্ন এলাকায় নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতো সাগর-রমজান দুইভাই। তাদের ডান হাত হিসেবে কাজ করতো একই এলাকার রাজা ওরফে পিচ্চি রাজা। বেশ কিছুদিন ধরে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। এর পেছনে রয়েছে পিচ্চি রাজাকে না জানিয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবা আনতে পাঠায় রমজান ও তার স্ত্রী। সেখানে ৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ রাজার স্ত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়। সম্প্রতি যশোরের কয়েকটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পিচ্চি রাজাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালায়। রাজার বিষয়ে রমজান পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। এছাড়া এলাকার প্রেম কুমারের বাড়িতে ডাকাতি করা স্বর্ণালংকার এবং টাকার ভাগ নিলেও রমজানকে সেই মামলায় আসামি করা হয়নি। রমজান পুলিশকে ম্যানেজ করে নিজে রক্ষা পেলেও রাজাকে ওই মামলার আসামি করা হয়। এলাকার মাদক ও অস্ত্রের কারবার রাজা-রমজান একই সাথে করলেও সকল স্থানে রাজাকেই দায়ী করা হয়। এইগুলো রমজানকে বেশ কিছুদিন ধরে রাজা সন্দেহের চোখে রাখে। এছাড়া কিছুদিন আগে আরেক সন্ত্রাসী তুহিনের পিতা কানা বাসারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কানা বাসারের গ্রেপ্তারের পেছনেও রমজান পুলিশকে তথ্য দিয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। এজন্য রমজানকে খুন করতে রাজা, তুহিনসহ কয়েকজনে পরিকল্পনা করে এবং সুযোগ খুঁজতে থাকে। ঘটনারদিন গত ৮ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোটরসাইকেলে তার শ^শুর বাড়ির সামনে গেলেও পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা পিচ্চি রাজাসহ কয়েকজনে রমজান আলীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।
এই ঘটনার পর থেকে রাজাসহ সকলেই গ্রেপ্তার এড়াতে গা-ঢাকা দেয়। তবে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে র্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ১১ মার্চ দিবাগত গভীর রাত ১টার দিকে এই হত্যা মামলার আসামি পটকে শাওন ও ইবাদুল যশোর শহরের চাঁচড়া ইসমাইল কলোনীতে অবস্থান করছে বলে জানতে পারে র্যাব। এসময় সেখানে অভিযান চালিয়ে ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে আরেকটি সংবাদের ভিত্তিতে শংকরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রগ্রপ্তার করা হয় ট্যাটু সুমনকে। ট্যাটু সুমনের বিরুদ্ধে ৩৯টি, পিচ্চি রাজার বিরুদ্ধে ২১টি মামলা রয়েছে। ১১ মার্চ ভোরে বাঘারপাড়া উপজেলার চাড়াভিটা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আসামি তুহিনকে। এদিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শার্শা উপজেলার দাদখালী থেকে গ্রেপ্তার করা এই মামলার প্রধান আসামি রাজা ওরফে পিচ্চি রাজাকে। পরে রাজার স্বীকারোক্তিতে রেলগেট পশ্চিমপাড়া দিঘিরপাড় থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ানশুটারগান, ১৪ রাউন্ড গুলি, একটি টিপ চাকু, তিনটি চাইনিজ কুড়াল, একটি চাকু ও একটি দা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করা হবে জানা গেছে।
সর্বশেষ
- লেখনিতে মাটি মানুষ আর শেকড়ের কথা তুলে আনতেন রুকুনউদ্দৌলাহ্
- দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানিতে ধস, রাজস্ব নেমে অর্ধেকে
- জাকসুর ভিপি স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতু, জিএস শিবির সমর্থিত মাজহার
- দল গঠনের নাটকীয়তা ছাপিয়ে জয়ে চোখ যশোরের
- চুয়াডাঙ্গায় যৌথ অভিযানে দেশীয় পিস্তল উদ্ধার
- ভারতে গণেশ বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ঢুকে পড়ল ট্রাক, নিহত ৯
- সালমানের পর এবার অভিনেত্রী দিশার বাড়িতে গোলাগুলি, আতঙ্কে বলিউড
- শার্শা সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় ৪ বাংলাদেশি নারী-পুরুষ আটক