এইচ আর তুহিন
বিএনপি-জামায়াতের চলমান অবরোধ-হরতাল এবং জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যশোরসহ দেশের ১৮টি জেলাকে বিশেষ নজরদারিতে রেখেছে পুলিশের সদর দপ্তর। এরমধ্যে খুলনা বিভাগের আরও তিনটি জেলা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে আন্দোলন-সহিংসতার অভিজ্ঞতা থেকেই এই নজরদারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের সদর দপ্তরের একটি বিশ^স্ত সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, এই ১৮ জেলায় সরকারবিরোধী আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। এসব জেলায় নাশকতার পরিসংখ্যানও বেশি। এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মাঠপর্যায়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে। যশোর পুলিশের এক কর্মকর্তা সদর দপ্তরের বার্তা পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আর যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন জানান, ‘প্রায় প্রতিদিনই সদর দপ্তর থেকে বার্তা পাঠানো হয়। সে মোতাবেক আমরা মাঠে কাজ করি।’
পুলিশের সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এসপিদের কাছে পাঠানো বার্তায় পুরোনো মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রাখা, ফুট প্যাট্রোলিং বাড়ানো ও নাশকতাকারীদের ধরতে র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনের আগে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য যাতে কোনো চক্র সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা না ঘটাতে পারে সেই দিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে। কোনো মহল যেন পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে না পারে এ জন্য সাদাপোশাকে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া থানা-পুলিশকে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর মাঠ কর্মকর্তাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কোনো গোষ্ঠী যেন গুজব তুলে পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে পুলিশকে। গুজব তৈরি হলে পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে দ্রুতই মাইকিং করে সবাইকে সচেতন করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে একাধিক পরামর্শ। সে জন্য পুলিশের আইসিটি শাখাকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার পাশাপাশি বিটিআরসি সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ ১৮ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অটুক থাকে এ জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগে ও পরে এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
ঝুঁকিপূর্ণ ১৮ জেলাগুলোর মধ্যে খুলনা বিভাগে রয়েছে যশোর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, বগুড়া, সিলেট, পঞ্চগড়, রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, নোয়াখালী, নরসিংদী, কুমিল্লা, নাটোর ও লালমনিরহাট।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন জানান, ‘জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আছে। পাশাপাশি নির্বাচনের আগে-পরে যেন কেউ নাশকতা করতে না পারে সেদিকেও নজর রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিভিন্ন ফরম্যাটে বার্তা পাঠানো হয়। সে মোতাবেক প্যাট্রোলিং বাড়ানো হয়। সদর দপ্তরের বার্তা অনুযায়ী টহল পুলিশের কাজ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি দুর্বৃত্তরা জেলার মধ্যে কোথায় অবস্থান নিয়ে শনাক্তের কাজ অব্যাহত রয়েছে।’