অভয়নগর প্রতিনিধি
অভয়নগর উপজেলার ভাঙ্গাগেট-আমতলা সড়কের ইছামতি গ্রামে খালের উপর নির্মাণাধীণ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজে অনিয়মের খবর প্রকাশের পর ক্ষুব্ধ জনগণ সোমবার সকালে গার্ডার ঢালাই কাজ বন্ধ করে দেন। পরে স্থানীয় প্রকৌশলী জনগণকে আশ্বস্ত করে পুনরায় কাজ শুরু হয়।
স্থানীয়রা জানান, মাটি মিশ্রিত পাথর ও খালের নোনা জল দিয়ে ঢালাই কাজ করা হচ্ছিলো। তাছাড়া স্টিলের সাটার না দিয়ে বাঁশ কাঠ দিয়ে সাটারিং করায় স্থানীয় জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে উপজেলা প্রকৌশলী যেয়ে ভাল কাজের নিশ্চয়তা দিলে জনগণ ফিরে যায়।
মঙ্গলবার সকালে ইছামতি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক পাথর, বালু, সিমেন্টের মিশ্রণ তৈরি করে তা দিয়ে সেতুর গার্ডার ঢালাইয়ের কাজ করছেন। সেতুটির গার্ডারের নিচের অংশে কাঠের তক্তা দিয়ে সাটার তৈরি করা হয়েছে। স্টিলের পাইপের সঙ্গে
গাছের বল্লী দেয়া হয়েছে।
এসময় সেখানে অবস্থানরত এলাকাবাসীদের কয়েকজন অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সকালে সেতুর গার্ডার ঢালাইয়ের কথা ছিল। সকাল নয়টায় তারা এসে দেখতে পান, শ্রমিকরা মাটি মিশ্রিত পাথর এবং লাল বালু মিশ্রণযন্ত্রে দিচ্ছেন। শ্যালো মেশিন দিয়ে জোয়ারে খালে আসা লোনা পানি তুলে তা দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে ঢালাইয়ের কাজ করছেন। এই অবস্থা দেখে তারা কাজে বাঁধা দেন। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন এবং সেখানে উপস্থিত একজন প্রকৌশলী কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠলে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে পাথর ধুয়ে, বালু পরিস্কার করে এবং নলকূপের পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে এক ঘন্টা পর সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে পুনরায় ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়।
হিদিয়া গ্রামের জসীম শেখ বলেন, সেতুটির কাজ ভালো হচ্ছে না। সেতুটির গার্ডারের নিচের অংশে কাঠের তক্তা দিয়ে সাটার তৈরি করা হয়েছে। গার্ডারের স্টিলের পাইপের সঙ্গে গাছের বল্লী দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে কাজের নিম্নমান দেখে এলাকাবাসী সমবেত হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। এক ঘন্টা বন্ধের পর পুনরায় কাজ শুরু করা হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আনোয়ারা ট্রেডার্সের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহিন খান বলেন, সকালে ঢালাইয়ের কাজে একটু সমস্যা হয়েছিল। পরে বিষয়টি ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
গ্রামীণ সেতু সহায়তা কর্মসূচির পরামর্শক শাহানুর আলী বলেন, চুক্তিপত্র অনুযায়ী স্টিল সাটারের পাশপাশি কাঠের সাটার দিয়ে কাজ করা যাবে। আমরা ঠিকমতো কাজটি তদারকি করছি। মঙ্গলবার সকালে গার্ডার ঢালাই দেয়ার সময় এলাকাবাসী বাধা দিয়েছিলেন। আমরা কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। পরে পাথর ভালো করে ধুয়ে, বালু পরিস্কার করে এবং নলকূপের পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে কাজ শুরু করা হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী এস এম ইয়াফি বলেন, গার্ডার ঢালাইয়ের সময় সমস্যা দেখা দেয়ায় কিছু সময়ের জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরে ঠিকমতো গার্ডার ঢালাই দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ জুন ব্রিজের কাজে অনিয়ম সংক্রান্ত খবর দৈনিক কল্যাণ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।