নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদরের ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হত্যার হুমকির ঘটনায় জিডি করার সপ্তাহ পার হলেও মামলা হিসেবে এখনও রেকর্ড হয়নি। সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক যুবলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম মাজহার মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেন।
পুলিশ বলছে- ভুক্তভোগী থানায় কোন এজাহার বা অভিযোগ না দেয়ায় মামলা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। গত ২৪ মার্চ মাজহারুল ইসলাম মোবাইল ফোনে শিক্ষক রবিউল ইসলামকে জীবননাশের হুমকি দেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অডিও ভাইরাল হয়। যা পরে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এই ঘটনার পর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা মাজহারুলকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে শহরে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছিল মাজহারুলকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছিল। তবে ডিবির ওসি রুপণ কুমার সরকার গ্রেফতারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
গত ৩১ মার্চ যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক উল্লেখ করেছেন, যশোর সদর উপজেলার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আগের কমিটির অগোচরে যুবলীগনেতা মাজহার ও তার সহযোগীরা এডহক কমিটির সভাপতি হিসাবে মনিরুজ্জামানকে নিযুক্ত করেন। এতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকরা ওই কমিটির বিরুদ্ধে অনস্থা আনাসহ একজন অভিভাবক হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে আদালতে মামলাটি চলমান রয়েছে।
গত ২৪ মার্চ দুপুর দুইটার দিকে মাজহার তার ০১৭১১৪৮৭৭১৯ নম্বর থেকে প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়ে কমিটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে বলেন। তাকে কমিটির বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে জানালে গালিগালাজসহ জীবননাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই জিডির মাধ্যমে নিরাপত্তা চেয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন।
এদিকে সোমবার রাতে যুবলীগনেতা মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের মুঠোফোনে হুমকির কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সোমবার রাত থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ওই কথোপকথনের অডিও। এখন বিষয়টি টক অব দ্যা টাউন। একজন শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ জীবননাশের হুমকি দেওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাঝে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের দায়ের করা জিডি থানা পুলিশ তদন্ত করছে। কিন্তু ঘটনার কয়েকদিন পার হলেও মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড বা কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় আতংকের মধ্যে রয়েছেন ওই শিক্ষকসহ তার পরিবার।
এই ব্যাপারে বুধবার কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ মনিরুজ্জামান বলেছেন, ভুক্তভোগী শিক্ষক থানায় লিখিত কোন অভিযোগ বা এজাহার দেননি। তিনি আরো বলেছেন, ইতিপূর্বে ওই শিক্ষকের দেয়া জিডি আমরা তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।