নিজস্ব প্রতিবেদক
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নের সবজি চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ সবজির ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। সবজি ক্ষেত বাঁচাতে পানি সরাতে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও মাঠে কাজ করেন চাষিরা। সব চেয়ে বেশি ক্ষতির আশংকা সবজির চারা উৎপাদনে যুক্ত চাষিদের।
এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থালকে এলাকার খাল, বিল, মাছের ঘের ভেসে একাকার হয়ে যাবে।
এদিকে, নিম্ন আয়ের মানুষ বৃষ্টির মধ্যে বাইরে বের হতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
যশোরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ হয়ে থাকে চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নে। এখানকার জমির তিন ভাগের দুই ভাগই সবজি চাষ হয়।
বর্তমানে কৃষকরা শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। এখানে মাঠের পর মাঠ জুড়ে পটল, পুইশাক, বরবটি, উচ্চে, ধেড়স, বেগুন, আগাম পাতাকপির চারা রোপন, কচুরমুখিসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেছিলেন। আষাঢ়ের শুরুতেই এবার ভারি বর্ষণে কৃষকরা অনেকটা কষ্ট করেই সবজি চাষে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে অধিকাংশ সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের দোগাছিয়া গ্রামের চাষি তরিকুল ইসলাম বলেন, পানিতে তার পটল ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পর সব মরে যাবে।
একই গ্রামের চাষি দেলোয়ার গাজী বলেন, প্রচুর বৃষ্টির কারণে বরবটি গাছের ফুল সব ঝরে যাচ্ছে, যার কারণে কোন ফলন নেই। এছাড়াও যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে গাছ বাঁচানো সম্ভব হবে না।
আব্দুলপুর গ্রামের চারা চাষি টিটো জানান, এমন বৃষ্টি হলে চারা বাঁচানো সম্ভব হবে না। তারপর ও যা বেঁচে থাকবে তা বিক্রি করা যাবেনা।
হৈবতপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার জানান, এমন বৃষ্টি হলে তাদের বেগুন ক্ষেতের সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে।
কৃষিবিদ ইউসুফ আলী বলেন, এই বৃষ্টির পর যদি রোদ হয় তাহলে গোড়ায় জমে থাকা পানি গরম হয়ে সব সবজি গাছের পচন দেখা দেবে।
একাধিক কৃষকের সাথে আলাপকালে তারা জানান, বৃষ্টির মধ্যে ঝড়ো হাওয়া সবজি চাষিদের জন্য অনেকটা মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।
তারা আরও জানান, বাতাসের তীব্রতার কারণে বিভিন্ন সবজির মাচা ভেঙে যেতে শুরু করেছে। যা কৃষকদের জন্য খুবই ক্ষতির কারণ।
তাদের ভাষ্যমতে এবছর সবজির জন্য বাজারে হাহাকার দেখা দেবে। বাজারে সবজির দাম দ্বিগুণ দিয়েও মিলবেনা।
মাছ চাষি চুড়ামনকাটি গ্রামের কুদ্দুস সালাম জানান, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে এলাকার সকল ঘের ভেসে একাকার হয়ে যাবে। এতে মাছ চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এছাড়াও সব চেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো।
আরও পড়ুন: যশোর-চুয়াডাঙ্গা রুটের ৪২টি বাস বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ