পাপিয়া মল্লিক
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অতি নিকটেই। তাই তড়িঘড়ি করে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। দিনরাত সমানতালে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
এমনই এক শিল্পী যশোরের সদর উপজেলার মাহিদিয়া গ্রামের বাসিন্দা স্বপন মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক (১৯)। তিনি একাদশ শ্রেণির ছাত্র। এবারের দুর্গাপূজা উপলক্ষে পড়াশুনা ও অন্যান্য কাজের পাশাপাশি বাড়িতেই তৈরি করছেন প্রতিমা।
জানা যায়, কোনো প্রশিক্ষণ ও ওস্তাদের সাহায্য ছাড়াই অবসর সময়ে প্রতিমা তৈরি করে আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।
পালবংশের সন্তান না হয়েও ছোট থেকে এই তরুণ প্রতিমা তৈরি করে আসছে বলে জানা গেছে। যা দেখে আবাক হয়েছেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
জানা যায়, ছোট থেকেই আগ্রহ নিজের হতে প্রতিমা তৈরি করার। গত ৬ বছর ধরে বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরি করে আসছে। বাড়িতে বসে নিজের হাতে প্রতিমা তৈরি করে পূজো করছেন এই একাদশ শ্রেণির ছাত্র। ২০১৯ সাল থেকে নিজেদের বাড়ির আঙিনায় মাটি দিয়ে লক্ষী, সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেন। তারপর তার প্রতিভা দেখে অবাক হন মা-বাবাসহ এলাকাবাসী। এভাবে প্রতিবছর বাড়ির আঙিনায় পূজামন্ডপ তৈরি করে পূজা করে এই তরুণ।
কার্তিক, লক্ষী, সরস্বতী, কালী প্রতিমাসহ ওই সকল দেবতাদের বাহন তৈরি করে থাকে। এরপর রংতুলির কাজটি তিনি নিজের হাতেই করে। কোনো ডাইস বা ফর্মা ছাড়াই নিজ হাতে প্রতিমার মুখমন্ডল তৈরি করেছে, যা অভাবনীয় সুন্দর কারুকার্যমন্ডিত।
সম্রাট মল্লিক জানান, আমি নিজ হাতে দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরি করবো ছোট থেকে এটা আমার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমার এই যাত্রা সহজ ছিল না। পরিবার থেকে অনেক বকা শুনেছি কিন্তু আমি থামিনি। কিন্তু এখন আমার পরিবার আমাকে সাপোর্ট করে। প্রতিমা আমি খুব ভালোবেসে তৈরি করি। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ও আর্শিবাদে আমি সেটা করতে পেরেছি। তাছাড়া এখন গ্রামের ও আশেপাশের অনেকেই আমার কাছে বিভিন্ন প্রতিমা বানানোর অর্ডার নিয়ে আসে। এতে করে আমি বেশি অনুপ্রেণিত হয়। আমি খুবই স্বল্প মূল্য নিয়ে প্রতিমা তৈরি করি। আমি গত ২ বছর যাবৎ বাহিরে দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজে যাচ্ছি এতে করে আমি নতুন করে কিছু শিখতে পারছি।
সম্রাট মল্লিকের মা শাস্তি মল্লিক জানান, ছেলে ছোট থেকেই ঠাকুর ভক্ত। অবসর সময়ে ও হাতের কাজ করতে ভালোবাসে এবং বিভিন্ন রকমের ঠাকুরের মূর্তি গড়ে। প্রথমত এসব কাজে আমাদের কারো মত ছিলো না। কিন্তু যখন আশেপাশের লোকজন বিষয়টি নিয়ে প্রশংসা করছে, তখন থেকে বিষয়টি আমারা মেনে নিয়েছি। এখন ছেলে বড় হয়ে যা হতে চাই; আমরা সেরকমভাবে সাহায্য করবো।
আরও পড়ুন: যবিপ্রবিতে অধ্যাপক পদে ‘পছন্দের প্রার্থীকে’ নিয়োগ দিতে নতুন নীতিমালা!