নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি শুরু হয় যশোরের সর্বোচ্চ ক্রিকেট আসর প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ। ছয় মাসে গ্রুপ পর্বের ১৯ ম্যাচ শেষ করতে পেরেছে আয়োজক যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। মে মাসের দুই-তিনবার শিডিউল দিয়েও বৃষ্টির জন্য শুরু করতে পারেনি। বৃষ্টির পর মাঠ উপযোগী হলে লিগের খেলা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু লিগের খেলা বন্ধ রেখে মাস্টার্স কাপ সিক্স-এ সাইড ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করছে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
অথচ প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগের জন্য শামস্-উল-হুদা স্টেডিয়ামে মাঠ বরাদ্ধ চেয়েও পায়নি জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। মাঠ না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত জেলার শীর্ষ লিগের আয়োজন করতে হয় নওয়াপাড়া সরকারি কলেজ মাঠে।
লিগে বেশির ভাগই জেলার উদীয়মান খেলোয়াড়রা খেলে, সেই খেলা বন্ধ রেখে ‘বুড়ো’দের ফুটবল বলে পরিচিত এ টুর্নামেন্ট কেন আয়োজন করছে তার উত্তর পাচ্ছে না যশোর ক্রীড়াপ্রেমিরা। তবে নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বেও কয়েকজন জানান আগামী বছর যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন। ভোট নিশ্চিত করতেই টুর্নামেন্টের ব্যবস্থাপনায় থাকা সোনালী অতীত ক্লাব যশোরকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।
টুর্নামেন্ট নিয়ে সাবেক ফুটবলার নূর ইমাম বাবুল বলেন, এত টাকা ব্যয় এ খেলা করা হচ্ছে। যতটাকা ব্যয় হচ্ছে সেই টাকা দিয়ে যদি যশোরের প্রয়াত ফুটবলারদের নামে কোন টুর্নামেন্ট করতো তাতে খেলোয়াড়রা উপকৃত হতো। আশাবাদ ব্যক্ত করছি সামনে তারা এসব আয়োজন আর করবে না।
যশোর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজামান মিঠু বলেন, আমি যে কোন খেলাকে সাধুবাদ জানায়। কিন্তু যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার গুটিকয়েক কর্মকর্তার কর্মকান্ডকে ধিক্কার জানায়। যারা ফুটবলের জন্য মাঠ দেয় না, তারাই এই ফুটবলের আয়োজন করছে।
এছাড়া দেশে এখন বিদ্যুতের সংকট রয়েছে। এই সংকটের মাঝে বিদ্যুৎ অপচয় করে বিনোদনের নামে রাতে খেলার আয়োজন করা যশোরবাসীর সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই না।
যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ ও ক্রিকেট পরিষদের সম্পাদক সোহেল মাসুদ হাসান টিটো বলেন, টুর্নামেন্ট আয়োজন করা আমাদের জন্য জরুরি ছিল না। কিন্তু এ টুর্নামেন্টের জন্য আগে থেকে স্টেডিয়াম বরাদ্ধ দেয়া ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে আমরা লিগ আয়োজন করতে পারিনি। তাই টুর্নামেন্ট শেষ হলে আমরা লিগ আয়োজন করবো।
এদিকে টুর্নামেন্ট নিয়ে বৃহস্পতিবার শামস্-উল-হুদা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। টুুর্নামেন্টের সার্বিক দিক তুলে ধরেন টুর্নামেন্ট কমিটির আহ্বায়ক এবিএম আখতারুজ্জামান। এবারের আসরে ছয়টি দল অংশ নেবে। দলগুলো হচ্ছে ‘ক’ গ্রুপে চিত্রা ক্যাপিটালস, ভৈরব কিংস ও কপোতাক্ষ ডায়নামিক। ‘খ’ গ্রুপে মেঘনা লায়ন, পদ্মা রেঞ্জার্স ও মধুমতি টাইটনিক।
প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হবে আজ সন্ধ্যা সাতটায়। প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হবে দু’টি করে ম্যাচ। প্রতিযোগিতার সমাপনী ঘটবে ৮ জুন। প্রতিযোগিতার বাজেট ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫শ টাকা। এ অর্থের জোগান আসবে এন্ট্রি ফি থেকে ৩০ হাজার, জেলা ক্রীড়া সংস্থা হতে ৩০ হাজার ও শুভাক্সক্ষীদের নিকট থেকে ১ লক্ষ আঠার হাজার ৫শত টাকা। এবারের টুর্নামেন্টের আয়োজনে রয়েছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল পরিষদ। ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে সোনালী অতীত ক্লাব। প্রতিটি দলে খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ১৩ জন করে। ৪০ উর্ধ্ব খেলোয়াড়রা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ সোহেল মাসুদ হাসান টিটো, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য রায়হান সিদ্দিকী প্রবাল, টুর্নামেন্ট কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ উল্লাহ, কাজী জামাল হোসেন, এনাম মাহমুদ খান বাবু, সোহেল আল মামুন নিশাদ প্রমুখ।