নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কিশোরীকে বিয়ের নামে সাত মাস ধর্ষণের অভিযোগের মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। বিয়ের কাজীসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেছেন কোতোয়ালি থানার এআই আব্দুর রাজ্জাক। আসামিরা হলো, সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার আলাউদ্দিন এবং তার দুই ছেলে সাজু হোসেন ও রবি ইসলাম রবি এবং একই এলাকার নেকমান সরদারের ছেলে বিয়ের কাজী আকবর আলী ওরফে আকবর খুঁড়া। বাদী একই এলাকার বাসিন্দা এবং ভুক্তভোগী কিশোরীর মা।
তিনি মামলায় বলেছেন, তার কিশোরী মেয়ে রামনগর এলাকার একটি স্কুলে লেখাপড়া করে। সাজু স্কুলে যাওয়া-আসার পথে মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতো। প্রেম প্রস্তাব দেয়াসহ বিয়ের জন্য বিভিন্ন ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলাইতে থাকতো। এক পর্যায় মেয়েটির সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর এই মামলার আসামি আকবর আলীকে ভুয়া কাজী সাজিয়ে কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে বলছে তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে আর কোন বাধা নাই। এভাবে ওইদিনের পর থেকে মেয়েটির সাথে স্বামী-স্ত্রীর মত শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিল সাজু হোসেন। চলতি বছরের ১৬ মে একটি কাগজ নিয়ে সাজু মেয়েটিকে বলছে তার একটি চাকরির জন্য জিম্মাদার হিসেবে স্বাক্ষর করতে হবে।
স্বামীর চাকরির জিম্মাদার হিসেবে মনে করে মেয়েটি সরল বিশ্বাসে স্বাক্ষর করে দেয়। ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে বলছে মেয়েকে তালাক হয়ে গেছে। সাজু ১৫ মে স্বাক্ষর করালেও ৫ মে তালাক দেয়া হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে। ফলে মেয়েটি তার বাড়ি থেকে একবস্ত্রে পিতার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় ১৭ মে সাজুসহ তার সাজানো কাজীকে মেয়ের পিতার বাড়িতে ডেকে নেয়া হয়। এসময়ও সাজু বলছে তালাক হয়ে গেছে। কিন্তু সাজানো কাজী আকবর হোসেন বলেছেন, তিনি এই বিয়ের ঘটনায় কাবিন রেজিস্ট্রি করেননি। কারণ মেয়েটি ছিলো নাবালিকা। পরে এই ঘটনায় মেয়ের মা কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণের অভিযোগে সাজু, তার পিতা, ভাই ও কাজীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। প্রথমে প্রেম এবং পরে বিয়ের নামে জালজালিয়াতির মাধ্যমে কাবিননামা তৈরি করে মেয়েটির সাথে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে শারীরিক সম্পর্ক করে ধর্ষণের অপরাধ করেছে বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রাজ্জাক চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন।