কল্যাণ ডেস্ক
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মার্কেটের সামনে এবং ফুটপাতে নোংরা পরিবেশে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মুখরোচক খাবার বিক্রি বন্ধে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার জনস্বার্থে দেশের ১০ আইনজীবীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ নিরাপদ থানা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সাতজনকে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।
নোটিশকারী ১০ আইনজীবী হলেন, শাম্মী আক্তার, মো. বাহাউদ্দিন আল ইমরান, মো. হাসান মিলু, আবিদ হোসেন, ইমরান হোসেন, জাহিদ হাসান ফাহাদ, এটিএম রেজাউন, শাহেন শাহ, মো. আরশাদ আলী এবং মো. সুমন হোসেন।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট রাস্তা করতে হবে: ওবায়দুল কাদের
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘বেঁচে থাকার জন্য মানুষের খাবার গ্রহণ অপরিহার্য। কিন্তু খাবার যদি হয় অনিরাপদ, তাহলে তা হতে পারে মানুষের নানা রোগসহ মৃত্যুর কারণ।
বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ও মার্কেটের সামনেসহ ফুটপাত ও এর পাশে নোংরা পরিবেশে নানা ধরনের অস্বাস্থ্যকর মুখরোচক খাবার বিক্রি হয়। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই হুমকি স্বরূপ।’
‘বিশ্বের অনেক দেশেই রাস্তার খাবার তৈরি ও পরিবেশন করা হয় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে। কিন্তু বাংলাদেশে অধিকাংশ রাস্তার খাবার প্রস্তুত ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এসবের কোনো বালাই নেই।
দূষিত পানি, ধুলাবালি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ অধিকাংশ রাস্তার খাবারকে করে তুলেছে অনিরাপদ। ফলে যে বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিদিন এসব খাবার খান, তারা বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকেন। যে সড়ক ও ফুটপাতে এসব খাবার বিক্রি হয়, সেগুলো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে রাস্তার খাবার দোকানের নিবন্ধন বা অনুমোদন দেয়ার ব্যবস্থা নেই। কোনো কর্তৃপক্ষের কাছেই রাস্তার খাবার বিক্রেতাদের কোনো তালিকাও নেই। খাবারের মান তদারকির দায়িত্বে থাকা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমও রাস্তার খাবারের ক্ষেত্রে একেবারেই সীমিত।
এ বিষয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি একটি দৈনিকে ‘রাস্তার খাবার নিরাপদ করতে উদ্যোগ নেই’ এবং গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে রাস্তার খাবার’ শিরোনামে দুইটি খবর প্রকাশিত হয়।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলেও সত্যি যে, বাংলাদেশে জুতাসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র বিক্রি হয় স্বাস্থ্যকর পরিবেশে। অন্যদিকে খাবার বিক্রি হয় খোলা অবস্থায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। যা ২০১৩ সালের নিরাপদ খাদ্য আইনের ২৫, ২৯, ৩৩ ধারার ও ২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ২৭, ২৯, ও ৩৬ ধারার পরিপন্থী।
নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল- কলেজ, মার্কেটের সামনেসহ ফুটপাত ও এর পাশে নোংরা পরিবেশে নানা ধরনের অস্বাস্থ্যকর মুখরোচক খাবার বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় আদালতে রিট দায়েরসহ দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের আত্মজীবনী অমূল্য সম্পদ’: প্রধানমন্ত্রী