# লিফট ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অবরুদ্ধ
# জাল সনদে চাকরি হারিয়েছেন ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী
# ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, কমিটি স্থগিত
# চাকরিপ্রার্থীদের আটকে রেখে নির্যাতন
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিদায়ী বছরে জুড়ে নানা ঘটনায় আলোচিত ছিল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়। ছাত্রলীগের মারামারি, কমিটি স্থগিত, চাকরি প্রার্থীদের আটকে রেখে নির্যাতন, বিশ^বিদ্যালয়ের লিফট ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অবরুদ্ধ, চাঁদার দাবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতন, জাল সনদে চাকরির দায়ে কর্মকর্ত-কর্মচারী বরখাস্তের ঘটনায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। আলোচিত পাঁচটি ঘটনাগুলো হচ্ছে-
লিফট ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অবরুদ্ধ :
বিশ^বিদ্যালয়ে ৫ কোটি টাকার লিফট ক্রয়ে দুর্নীতি বন্ধসহ ১২ দফা দাবিতে গত ১৭ জুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রায় ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিশ^বিদ্যায়ের সকল পরিবহন ও আবাসিক হল বন্ধসহ উপাচার্যের কার্যালয়ের বিদুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়।
চাকরি হারিয়েছেন ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী :
জাল সনদে চাকরি ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) অন্তত ৯ কর্মকর্তা কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে গত ১৪ মে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় জাল সনদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত ও দুজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর হয়। বরখাস্তরা হলেন- টেকনিক্যাল অফিসার মো. জাহিদ হাসান (স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) মো. জাহাঙ্গীর আলম (স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) মো. সাকিব ইসলাম (স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) মোছা. হাসনা হেনা (স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), সিনিয়র ক্লিনার দিলীপ হরিজন (অষ্টম শ্রেণি), ক্লিনার বাসুদেব দাস (অষ্টম শ্রেণি)। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো দুজন হলেন- সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) মো. মহিদুল ইসলাম (স্নাতকোত্তর, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়), মেকানিক মো. জাকির হোসেনকে (স্নাতকোত্তর, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়)। ৯ সেপ্টেম্বর যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সভায় চাকরিতে নিয়োগবাণিজ্যে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. হায়াতুজ্জামানের আগামী পাঁচ বছর পদোন্নতি ও তিনটি বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় সিনিয়র টেলিফোন অপারেটর ফয়সাল কবিরকে।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, কমিটি স্থগিত :
শাখা ছাত্রলীগের দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো: আল মামুন সিমন সহ আরও ৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে। এ ঘটনায় আহতরা বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করে। উক্ত ঘটনায় যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। প্রায় একমাস সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকার পর ৯ নভেম্বর কমিটির ওপর থেকে আরোপিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তীতে ডিসেম্বর মাসে রিজেন্ট বোর্ডের ৯৬তম সভায় ওই ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের ৮ নেতাকর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়।
চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীদের আটকে রেখে নির্যাতন :
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) লিফট অপারেটরের নিয়োগ পরীক্ষার ১৭ জন চাকরি প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। অপহরণের শিকার চাকরি প্রার্থীদের দাবী পরীক্ষা দিতে আসার সময় সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে তাদের ধরে নিয়ে যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে আটকে রাখা হয়। পরে বিকালে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নামে থানায় মামলা হয়।
১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতন :
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নং রুমে প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে ইসমাইল হোসেন নামের এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মারধর করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরবর্তীতে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
