কল্যাণ ডেস্ক
দেশের পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলায় চলমান বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে পুরুষ ৪১ জন, নারী ৬ জন ও শিশু ৭ জন। শুক্রবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই হালনাগাদ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে বন্যাকবলিত ১১ জেলার (ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার) মধ্যে সিলেট, হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে।
১১ জেলায় মোট ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৭ জন।
মারা যাওয়া ৫৪ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৯ জন ফেনীর বাসিন্দা; দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ জনের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। এই দুই জেলার বাইরে নোয়াখালীতে ৮, চট্টগ্রামে ৬, কক্সবাজারে ৩ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার ও খাগড়াছড়িতে ১ জন করে মারা গেছে। এছাড়া মৌলভীবাজারে নিখোঁজ আছে একজন।
পানিবন্দি বা ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ৩ হাজার ২৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮৭ জন লোক এবং ৩৮ হাজার ১৯২টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৫৬৭টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এদিকে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের সকল প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মনু নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল কমছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। ফলে এ সময় সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, ফেনী, মুহুরি, গোমতী, তিতাস, সাঙ্গু, মাতামুহুরি, কর্ণফুলি, হালদা ও অন্যান্য প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল কমতে পারে।