নিজস্ব প্রতিবেদক
মাঠ জুড়ে কঁচিকাঁচাদের শোরগোল। তারা বাংলাদেশ বাংলাদেশ; আর ব্রাজিল ব্রাজিল শ্লোগানে চারপাশ মুখর করে সমর্থক দলের খেলোয়ারদের উৎসাহ যোগাচ্ছে। খেলোয়ারদের মতো শিশুদেরও সবার পরণে ছিল নিজেদের পছন্দের দলের জার্সি। ছেলে-মেয়েদের সাথে ফুটবল খেলায় মেতেছিলেন অভিভাবকেরাও। শনিবার যশোর শহরের ঈদগাহ্ ময়দানে ব্রাদার টিটোস হোম স্কুলের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি-২০২৩’র ফাইনাল খেলা ঘিরে ছিল এমন উৎসাহ ও উদ্দীপন।
আয়োজক সূত্র জানায়, বিদ্যালয়টির প্লে-গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর বিশ্বকাপ ফুটবল প্রস্তুতির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। শিশুদের চিন্তা এবং চেতনায় বিশ্বকাপের স্বপ্নের বীজ বুনে দেয়ায় এই কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য।
২০২৩ সালের প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশ ও ব্রাজিল দুই দলে বিভক্ত হয়ে চূড়ান্ত ম্যাচের খেলায় নামে স্কুলটির ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। এদিন নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ গোলে ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকে। বাংলাদেশ দলের পক্ষে আফরিন একাই তিনটি গোল করে হ্যাট্রিক করে। এরপর টাইব্রেকারে ২-১ গোলে বাংলাদেশ টিম বিজয়ী হয়।
বিজয়ী দলের হাতে রেপ্লিকা বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে দেয়া হয়। এ ছাড়াও চ্যাম্পিয়ন এবং রানার-আপ দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে গোল্ড এবং সিলভার মেডেল দেয়া হয়েছে।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় খেলা শুরু হয়। এর আগে ক্ষুদে খেলোয়াড়দের সাথে অতিথিদের পরিচয় করে দেয়া হয়। খেলায় ছিল পেশাদার রেফারি স্বপন কুমার। ছিল সাজ সাজ অবস্থা। দেখে মনে হয়েছে এ যেন বিশ^কাপ ফুটবল খেলার আয়োজন। খেলা শুরুর ৯ মিনিটের মাথায় ৩টা ৩৯ মিনিটে বাংলাদেশ দলের পক্ষে গোল করেন আফরিন। এরপর প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের খেলোয়াড় সাবিক গোল করে খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনে। পরে বাংলাদেশ দলের পক্ষে আফরিন আরও ২টি দল করে। ব্রাজিল দলের পক্ষে মুহিবুর ২টি গোল করলে প্রথমার্ধ ৩-৩ ড্র হয়।
নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে রোফারি পেনাল্টি করান। এতে বাংলাদেশ দল ২-১ গোলে জয় লাভ করে।
খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা। বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোর সরকারি মাইকেল মধূসুদন কলেজের (এমএম কলেজ) সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহিন ও ব্যবসায়ী জাকির হোসেন পলাশ।
এসময় প্রধান অতিথি বীরমুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা বলেন, পড়ালেখার অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো খেলাধুলা। যে বিদ্যালয়ে খেলাধুলা হয় না; সেখানে সঠিকভাবে পড়ালেখাও সম্ভব হয় না। কারণ খেলার মাধ্যমে শরীর ও মন ভালো থাকে। তাই এই খেলার আয়োজন করায় ব্রাদার্স টিটোস হোমের সকল শিক্ষককে তিনি ধন্যবাদ জানান।
সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহিন বলেন, এধরণের আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই। কেননা এধরণের খেলাধুলার আয়োজন সাধারণত হয় না। শিশুদের খেলা দেখে আসলেই মনে হয়েছে তারা বিশ্বকাপ খেলছে। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলার চর্চা করা অতি প্রয়োজন। তাহলে শিশুদের আরও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
খেলায় লাইসম্যানের দায়িত্ব পালন করেন সাংবাদিক জাহিদ হাসান ও শিক্ষার্থী ফিরোজ হোসেন।