বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি: বাগেরহাটের চিতলমারীতে মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা এবং বৃদ্ধের স্ত্রীকেও বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার গিলগাথী গ্রামের ধানক্ষেতে এ হত্যাকান্ড ঘটে।
রোববার সকালে পুলিশ ধানক্ষেত থেকে ওই বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ওই বৃদ্ধের বাড়ির দুই দিনমজুরকে আটক ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাকুও উদ্ধার করেছে।
পুলিশের ধারণা, বাড়িতে রক্ষিত নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের উদ্দেশ্যে ওই দিনমজুররা এই হত্যাকান্ড ঘটাতে পারে। বৃদ্ধকে হত্যার পর ওই রাতেই বাড়িতে এসে তার স্ত্রী রমা রানী মন্ডলকে (৬০) বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে পুলিশ জানায়।
নিহত শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডল (৭২) বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার গিলগাথী গ্রামের মহেন্দ্রনাথ মন্ডলের ছেলে।
আটক দুই দিনমজুর হলেন বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীখালী গ্রামের জ্যোতিষ মন্ডলের ছেলে অপূর্ব মন্ডল (২০) এবং একই গ্রামের সুকেন্দ্রনাথ হালদারের ছেলে সুব্রত হালাদার (৩৫)। পালিয়ে যাওয়ার সময় রোববার দুপুরে কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ডবাজার থেকে সুব্রত হালদারকে এবং ভোরে চিতলমারী উপজেলার বাখেরগঞ্জ বাজার থেকে অপূর্বকে আটক করে পুলিশ।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচএম কামরুজ্জামান খান জানান, গত ৯ মার্চ মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডল তার ধানক্ষেতে কাজ করাতে দিনমজুর অপূর্ব মন্ডল ও সুব্রত হালদারকে ফকিরহাট থেকে চুক্তিতে বাড়িতে আনেন। এর পর থেকে ওই দুই শ্রমিক তার বাড়িতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করছিলেন। শনিবার গভীর রাতে ওই দুই শ্রমিককে নিয়ে শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডল ধানক্ষেতের সেচ মেশিন বন্ধ করতে যান।
ওসি এইচ এম কামরুজ্জামান খান আরো জানান, ওই মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীকে চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মৃতদেহ ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। এরপর মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীর বাড়িতে এসে তার স্ত্রী রমা রানী মন্ডলকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ সময় রমা রানী ডাক-চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে এলে হত্যা চেষ্টাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের আটক করা হয়েছে।
ওসি এইচএম কামরুজ্জামান খানের দেয়া তথ্য মতে, ঘটনার সময় বাড়িতে ওই বৃদ্ধ ও তার স্ত্রী ছাড়া আর কেউ ছিল না। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলেও ওসি জানান। এর সঙ্গে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।