নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের বাঘারপাড়ার সাবেক উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার এবিএ মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়। এক কোটি ৭৫ হাজার ৯৬৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৪৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৬৫ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গতকাল ঝিনাইদহ কার্যালয়ে এ মামলা করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোরের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন।
আসামি মফিদুল ইসলাম মাগুরা জেলা শহরের জেলাপাড়ার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে।
মামলার বিবরণ মতে, মফিদুল ইসলাম ১৯৮৭ সালের ১৭ আগস্ট সার্ভেয়ার পদে সাতক্ষীরা সদর সেটেলমেন্ট অফিসে যোগদান করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন শেষে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার পদে দায়িত্ব পালন করেন। চাকরি জীবন শেষে ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর তিনি চাকরি থেকে পিআরএল ছুটিয়ে যান। মফিদুল ইসলাম প্রথম বিয়ে করার পরে স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়। তবে সেই স্ত্রী গর্ভে একটি মেয়ের জন্ম হয়েছিল। বর্তমানে মেয়েটি বিবাহিত। পরে মুসলিমা ইয়াসমিন নামে এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন মফিদুল। মুসলিমা ইয়াসমিন গৃহিনী। মুসলিমার গর্ভে জমজ এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। দুদক অভিযোগ পায় মফিদুল ইসলাম বিপুল সম্পদের মালিক। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। দুদকের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মফিদুল ইসলাম তার নিজ ও তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে মাগুরা সদর উপজেলায় একটি দুইতলা বাড়ি যার মূল্য ১৮ লাখ ২০ হাজার ৬২০ টাকা। একই উপজেলাধীন মাগুরা, বড়খড়ি, শিমুলিয়া, সীতারাম ও রায়গ্রাম মৌজায় পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত দুই একর ৩২.২৪ শতক জমি পাওয়া যায়। তবে চাকরিতে যোগদানের পূর্বে তিনটি দলিলমূলে ক্রয়কৃত ৭৮ শতক, চাকরিতে যোগদানের পরে আটটি দলিলমূলে ক্রয়সূত্রে দুই একর সাড়ে সাত শতক এবং অছিনামা মূলে প্রাপ্ত ৩৩ শতকসহ মোট পাঁচ একর ৪৯ দশমিক ৭৪ শতক জমি (যার মূল্য পাঁচ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৩ টাকা এবং আরো ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৪১৩ টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়। অপরদিকে অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ১৬ ভরি ১০ আনা স্বর্ণ, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, আসবাবপত্র, মোটর সাইকেল, ব্যাংকে জমা ও সঞ্চয়পত্র (মেয়াদী, পেনশন ও পারিবারিক) ক্রয় বাবদ রয়েছে আরো ৭৯ লাখ ৫০ হাজার ৪৬৩ টাকা। সর্ব মোট এক কোটি তিন লাখ ১৩ হাজার ৮৭৬ টাকার সম্পদের হিসাব বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেন।
সম্পদ বিবরণী বিশ্লেষণ করে এক কোটি ৭৫ হাজার ৯৬৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৪৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৬৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
