বাঘারপাড়া (যশোর) প্রতিনিধি: বাঘারপাড়ায় চলতি অর্থ বছরে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির থেকে বরাদ্দের প্রায় চার লাখ টাকার মালামাল ক্রয় ও বিতরণ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের কোন চেয়ারম্যানের সাথে নুন্যতম সমন্বয় না করেই এ অর্থ ব্যয় হচ্ছে। টাকা উত্তোলনের তিনমাস পর ব্যয় করা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার মুখে পড়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী।
তবে তিনি বলেন, আমি শতভাগ সততার সাথেই কাজ করছি। কিছু লোক আছে যারা সব সময় সমালোচনা করে বেড়ান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও হিসাবরক্ষণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে উপজেলা উন্নয়ন সহায়তা থেকে বাঘারপাড়া উপজেলায় তিন লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দপত্রে বলা হয়েছে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধকল্পে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, এন্টিসেপটিক সাবান, পালস অক্সিমিটার, অক্সিজেন সিলিন্ডার, থার্মাল স্ক্যানার ইত্যাদি বিনামূল্যে বিতরণ গ্রহণে এ অর্থ ব্যয় করতে হবে। বরাদ্দের এ অর্থ অনুসরণ করার নির্দেশসহ বরাদ্দপত্রে বলা হয়েছে আর্থিক রীতি-নীতি অনুযায়ী ব্যয় নির্বাহ করে সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কাছে বিল দাখিলপূর্বক অর্থ উত্তোলন করতে হবে। অথচ উপজেলা চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী কোন নিয়ম না মেনেই সমুদয় টাকা তুলে নিয়েছেন।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস সূত্রে জানা গেছে গত ৬ ডিসেম্বর মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহের জন্য এ সংক্রান্ত একটি বিল দাখিল হয়। যে বিলের পরিমাণ তিন লাখ ৪২ হাজার ৭৪০টাকা।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহের জন্য কোটেশন টেন্ডারের মাধ্যমে মেসার্স আয়াদ এন্টারপ্রাইজের নামে কাজটি দেয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সব কাগজই উপজেলা চেয়ারম্যান সরবরাহ করেছেন।
ধলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, এ বরাদ্দ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তবে তিনি জানতে পেরেছেন কয়েকদিন আগে ধলগ্রাম হাই স্কুলে উপজেলা চেয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের মাঝে কিছু মাস্ক বিতরণ করতে যেতে চেয়েছিলেন। বাঘারপাড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলহাস উদ্দীন বলেন, গত বুধবার উপজেলা চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী আমার প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন। এদিন তিনি দশজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে যান। পরে ৫০০ মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়েছেন। যা শনিবার সকল শিক্ষার্থীর মাঝে বিতরণ করেছি। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, এ বরাদ্দ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদের সাথে সমন্বয় করে ব্যয় করার কথা থাকলেও তিনি আমাদের সাথে কোন সমন্বয় করেননি। এর আগেও এক লাখ টাকা এসেছিলো। সেটাও তিনি নিজের ইচ্ছমত নয়ছয় করেছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিথীকা বিশ্বাস বলেছেন, কোথায় কিভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ করছেন তার কিছুই জানি না। যা কোন মানুষই মুখে দিতে পারেনা।
উপজেলা চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী বলেন, লকডাউন ও নিজের অসুস্থতার কারণে সময়মত দিতে পারিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবই জানেন। তার নলেজে দিয়েই আমি সব করছি। আমি একশভাগ সততার সাথেই কাজ করছি। কিছু লোক আছে যারা সব সময় সমালোচনা করে বেড়ান।