বায়জিদ হোসেন, মোংলা: পশুর নদীর নাব্যতা রক্ষার জন্য অপরিকল্পিত জনস্বার্থ বিরোধী ড্রেজিং প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। একই সাথে এই ড্রেজিং প্রকল্পের ফলে পরিবেশ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া চলছে। অবিলম্বে পশুর নদীর অপরিকল্পিত ড্রেজিং বন্ধ করে পরিবেশ বান্ধব, জনবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) আয়োজনে মোংলা বন্দর কর্তৃক পশুর নদী ড্রেজিংয়ের বালুর কবল থেকে বাণীশান্তা ইউনিয়নের তিনফসলি তিনশো একর কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে বানীশান্তা-ভোজনখালী সংযোগ সড়ক মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতিসংঘের গবেষণা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান বাপা’র সহসভাপতি ড. নজরুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বাপা’র জাতীয় পরিষদ সদস্য মোংলা উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নূর আলম শেখ। জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান। জনসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাণীশান্তা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায়। জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুব বাপা’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দেওয়ান নূরতাজ আলম, বাণীশান্তা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল রপ্তান, সিপিবি খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল আমীন, কৃষক নেতা কিশোর রায়, বাণীশান্তা ইউনিয়ন কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা সঞ্জীব দাস, বাণীশান্তা ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন, সত্যজিৎ গাইন, বিশ্বজিৎ মন্ডল, সোহেল পাটোয়ারী, বিজন বিহারী মন্ডল, মোংলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হুমায়ুন কবির, বিজন কুমার বৈদ্য, বাপা নেতা নাজমুল হক, কমলা সরকার, ইস্রাফিল, বয়াতি, রাসেল শেখ, হাসিব সরদার, মিতালী বাওয়ালী প্রমূখ।
প্রধান বক্তা শরীফ জামিল বলেন, প্রান্তিক মানুষের জমি আর জীবিকা ধ্বংস করে উন্নয়নের নামে পশুর নদীতে চালানো আগ্রাসী খনন শুধু সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রের উপরই আঘাত নয় বরং দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে চরম মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন করে তুলেছে। স্থানীয় জনগনের সাথে কথা না বলে এরকম অগ্রহণযোগ্য প্রকল্প সরকারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালিত কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সভাপতির বক্তৃতায় বাপা নেতা নূর আলম শেখ বলেন বাণীশান্তা ইউনিয়নের তিন ফসলি কৃষিজমি ধ্বংস করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ড্রেজিংয়ের বালু ফেললে কৃষকরা কর্মহীন হয়ে পড়বে। এছাড়া উচ্ছেদ ও পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে এবং কর্মহীন মানুষ সুন্দরবনের উপর অধিক মাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। যা টেকসই উন্নয়ন ধারণার পরিপন্থী। কৃষিজমি ধ্বংস করে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য তিনি মোংলা বন্দর ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানান।